লন্ডন সংবাদদাতা

০৭ এপ্রিল, ২০১৫ ০১:০৮

বৃটেনের নির্বাচনে টিউলিপ, উঠে আসছে বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ

আগামী ৭ মে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে লন্ডনের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসন হ্যাম্পট্যাড অ্যান্ড কিলবার্নে লেবার দলের প্রার্থী হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। আর তাই এবার ব্রিটেন পার্লামেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উচ্চারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর নাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে তিনি। লন্ডনের মিচামে জন্ম নেওয়া টিউলিপ কিংস কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০১০ সালে স্থানীয় ক্যামডেন কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। লেবার দলীয় এমপি গ্লেন্ডা জ্যাকসন বার্ধক্যজনিত কারণে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিলে স্থানীয় লেবার সদস্যদের ভোটে টিউলিপ প্রার্থিতা অর্জন করেন। ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা 'ডেইলি ইন্ডিপেনডেন্ট'-এ সিমন অসবর্ণ নামের প্রতিবেদক টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে তাঁর এক প্রতিবেদনে তুলে আনেন দীর্ঘ ৪০ বছরের বিয়োগের ইতিহাস। প্রসঙ্গক্রমেই উঠে আসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম।

টিউলিপ সিদ্দিকী তাঁর রাজনীতিতে আসা নিয়ে মা শেখ রেহানার ভয়ের কথা ও তুলে ধরেন 'সিমন'কে দেয়া সাক্ষাৎকারে। তিনি জানান, "১৯৭৫ সালে সবাইকে হারিয়ে আমার মা আমাদের তিন ভাই বোনদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। আমার খালা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ১৯ বার হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। তাই তিনি আমার রাজনীতি নিয়ে খুশী ছিলেন না। তিনি সবসময় খুব উদ্বিগ্ন থাকতেন আমি কোথায় যাচ্ছি, কেমন আছি। তাঁকে সন্তুষ্ট করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। ব্রিটেনের রাজনীতি এমন না, যে হঠাৎ করে কেউ এসে আমাকে খুন করে যাবে। সিমন তাঁর প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করেন টিউলিপ হয়তো তাঁর বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হবেন। কিন্তু সেটা কঠিন সংগ্রাম করে অর্জন করতে হবে। ভিআইপি মন্ত্রী পরিবেষ্টিত এই এলাকায় তিনি কাউন্সিলর হিসাবে বিজয়ী হয়ে কাজ করেছেন এবং ২০১০ সালের নির্বাচনে তিনি তাঁর সমর্থকদের এবং তাঁর ওয়েব সাইটে নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বিষয়ে সমর্থকদের নীরব থাকতে বলেছিলেন।

কিন্তু ২০১৩ সালে তিনি যখন লেবার প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি বলেন, "আমি জানি জনগণ আবারও আমার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে আলোচনা করবেন।" টিউলিপ জানান, "বাংলাদেশের রাজনীতি আমাকে আকর্ষন করে না।" তিনি শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারণায় যোগ দিয়েছিলেন বলেও জানান। শেখ হাসিনা এবং নিজের নির্বাচনী প্রচারণার তূলণা করে টিউলিপ জানান, তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় গেছেন। বিভিন্ন দোকানে গেছেন কেনাকাটা করেছেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনার সংগ্রাম তিনি দেখেছেন। টিউলিপ বলেন, "আমি চাইনা আমার পরিবারের ছায়া ওয়েষ্ট মিনিষ্টারে এসে পড়ুক। আমি আমার নিজের পরিচয়ে বিজয়ী হতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। এমন অনেক বাঙালিকে আমি পেয়েছি যারা এসে জিজ্ঞাসা করেন, 'অহ! আপনি প্রধানমন্ত্রীর ভাগনি? দেশে আমার ভাড়ার সমস্যাটা সমাধান করে দিতে পারবেন'।" দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে টিউলিপের জন্ম, বেড়ে উঠা, পড়াশুনা এসব বিষয়ও তুলে আনেন সিমন। আর এই নতুন প্রজন্মের হাত ধরে ব্রিটেন পার্লামেন্টের নির্বাচনী আলোচনায় উঠে আসলেন বঙ্গবন্ধু।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত