জুয়েল রাজ, যুক্তরাজ্য

১৬ নভেম্বর, ২০১৬ ১৩:২১

লন্ডনের মঞ্চ মাতাল বাংলা বার্মিস

বাংলা নাটকের সর্ব বৃহৎ আসর ‘‘সিজন অব বাংলা ড্রামা’’ শুরু হয়েছে লন্ডনে। গত ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবের আয়োজক টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিল। এবার উৎসবের ১৪তম বছর উদযাপন করছে উৎসবটি।

এ উৎসবে গত ১২ নভেম্বর বার্মিংহামের নাট্যদল ‘ পূর্বানাটের’ পরিবেশনা ছিল নাটক বাংলা বার্মিস।

তিন প্রজন্মের নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ব্রিটেনে শিকড় বিস্তারের কাহিনী নাটক বাংলা বার্মিস। ৭০ এর দশক থেকে বর্তমান প্রজন্মের মূল স্রোতে মিশে যাওয়া, আগের প্রজন্মের দেশের প্রতি টান, বর্ণবাদ মোকাবেলা করে ঠিকে থাকার সংগ্রাম উঠে আসে নাটকটিতে।

ভাগ্যান্বেষণে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেয়া বাংলাদেশি দুই তরুণ মালিক এবং হিশাম। হিশাম প্রেমে পড়ে যায় প্রতিবেশী জেমা নামের এক শ্বেতাঙ্গ তরুণীর। এক সময় বিয়ে ও করেন সেই নারীকে ।অপর যুবক মালিক কোনো শ্বেতাঙ্গ মেয়েকে বিয়ে করার কথা কল্পনাও করতে পারে না। তাই বাংলাদেশ থেকে বিয়ে করে বৌ নিয়ে আসে। বিপত্তি বাঁধে মালিকের মেয়ে যখন বড় হয়। তাঁর মেয়ে তানিয়া শ্বেতাঙ্গ এক যুবকের সাথে সম্পর্কে জড়ায়। নানা নাটকীয়তার পর মেয়ের সম্পর্ককে মেনে না নিয়ে উপায় থাকে না মালিকের।

এতে উঠে আসে ভিন্ন দেশ, ভিন্ন সংস্কৃতি ও ভিন্ন পরিবেশের যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পরিবারের নানা টানাপোড়নের কাহিনী। হাস্যরসে পরিপূর্ণ নাটকটিতে উঠে আসে বাংলাদেশিদের মধ্যে বিরাজমান নানা কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার চিত্র। রেস্টুরেন্ট ব্যবসা, আয়কর ভীতি কিংবা শেফের ইংরেজি ভাষা না জানার অভিনয় করা, দর্শকদের আনন্দ দেয়। মালিকের পরিবার যখন দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করে লাগেজ নিয়ে নানা হাস্যরস প্রবাসীদের দেশে যাওয়ার কথাই মনে করিয়ে দেয়।

মুরাদ খানের রচনা ও মুরাদ খান ও ডমিনিক ওয়ার্ডন-এর নির্দেশনায় ইংরেজি ভাষায় মঞ্চায়িত নাটকটি দর্শকের বেশ আলোড়িত করে। নাটকটিতে বাংলাদেশী, পাকিস্তানী ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিনয় শিল্পীর সাথে ব্রিটেনের শিল্পীরা নাটকটিতে অভিনয় করেন।

নাটক দেখতে আসা রানা মেহের বলেন, পূর্বানাট গত বছর তাঁদের সল্টি ওয়াটার নাটক দিয়ে ও মঞ্চ মাতিয়েছিল। আর এবার আবার বাংলা বার্মিস দিয়ে আমাদের অভিভূত করে গেল। দিনদিন প্রত্যাশার পাল্লা ভারী হচ্ছে। আমার প্রত্যাশা পূর্বানাট এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত