নিউজ ডেস্ক

০৩ মে, ২০১৫ ০৩:২৮

আদম পাচারের অভিযোগে ওমরাহ ভিসা বন্ধ : রমজানে ভিসাপ্রাপ্তি অনিশ্চয়তায়

ওমরাহ ভিসার নামে আদম পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সৌদি আরব। কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটের ৩১ এজেন্সিকে। এই কালো তালিকাভুক্ত হজ এজেন্সির মধ্যে রয়েছে সিলেটের রাব্বানী ওভারসিজও।

এ ঘটনায় গত এক মাস ধরে বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে সৌদি। কবে তা পুনরায় দেওয়া হবে তাও অনিশ্চিত।

ঘটনার জের ধরে আগামি রমজান মাসে বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা প্রাপ্তি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। অথচ হজের মৌসুম ছাড়া রমজান মাসে অধিকাংশ বাংলাদেশিই ওমরাহ হজ পালন করতে সৌদি আরব গমন করে থাকেন।

সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, কালো তালিকায় উঠে আসার কারণে আসছে হজ মৌসুমেও বাংলাদেশিদের হজ ভিসার ক্ষেত্রে এই ইস্যুটি জটিলতা তৈরি করতে পারে। ওমরাহ ভিসা নিয়ে সৌদি আরব যাওয়ার পর সেখান থেকে পালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে তারা ফলে সৌদি সরকারের পক্ষে তাদেরকে সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। 

ওমরাহ করতে গিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিদের দেশে না ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সৌদি সরকার গত ২২ মার্চ থেকে পুরোপুরিভাবে ওমরা ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটের ৩১ হজ এজেন্সি ওমরাহ ভিসার নামে সৌদি আরবে আদম পাচার করছে। এই এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে গত চার মাসে ওমরাহ পালন করতে সৌদি গিয়ে তাদের একটি বড় অংশ দেশে ফেরেননি। গত ডিসেম্বর থেকে চলতি মাসের মার্চ পর্যন্ত থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার বাংলাদেশি ওমরাহ পালন করতে সৌদি গেছেন। তাদের প্রত্যেকের ভিসার মেয়াদ ছিল ১৪ থেকে ২৮ দিন।

সৌদি সরকারের কালো তালিকাভুক্ত বাংলাদেশি এজেন্সিগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামের আল আমানাত ট্রাভেলস, ঢাকার আল ফাতিহা ট্রাভেলস, হাই লিংকস ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল, চট্টগ্রামের যোগাযোগ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, ঢাকার ইনসাফ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, মেসার্স এসএইচ ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল, আবাবিল ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, মিনি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, রাজান ওভারসিজ, আল-আমীন এভিয়েশন, হানা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, সোনিয়া ট্রাভেলস, এসএইচ ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনাল, সাদমান এয়ার সার্ভিস, সৌদি-বাংলা হজ সার্ভিস, এয়ার কক্স ইন্টারন্যাশনাল, বিএমএস ট্রাভেলস, সেন্ট্রাল ট্রাভেলস, গালফ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, চট্টগ্রামের রাহাত ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, এসবি আগা অ্যান্ড কোং, ঢাকার ট্রিশন ওভারসিজ, চট্টগামের নিসান ওভারসিজ, মাসুদ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, সিলেটের রাব্বানী ওভারসিজ, ঢাকার ট্রাভেলস স্কাই কানেকশন, গ্রিন হজ ট্রাভেলস, স্বপ্নপুরী ইন্টারন্যাশনাল, গুড জয় ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, আরিফ ত্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এবং সিলেটের রাব্বানী ওভারসিজ-২।

এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর নেতারা জানান, এক ভাগের নিচে যাত্রী অবৈধভাবে থাকলেও অনেক সময় সেটি সৌদি সরকার ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে! কিন্তু এবার অতিরিক্ত ওমরাহ যাত্রী দেশটিতে রয়ে গেছেন। এজন্য বাংলাদেশকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে সৌদি।

হাব নেতারা জানান, কেবল রমজান মাসেই বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে যান। পবিত্র হজের পর রমজানই হচ্ছে ওমরাহ মৌসুম। আর এই সময়ে এবার কোনো ভিসা পাবে না বাংলাদেশ। রমজান মাসে সিলেট থেকেই ৭ থেকে ৮ হাজার মানুষ ওমরাহ পালনে সৌদি আসেন। কিন্তু এবার সে সুযোগ নেই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত