সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, নিউ ইয়র্ক থেকে

১৭ আগস্ট, ২০১৭ ১০:৩৮

যুক্তরাষ্ট্রে শোক দিবস পালন, পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে শাস্তি কার্যকরের দাবি

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের অবিলম্বে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এবং তাদেরকে ফেরাতে মার্কিন প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সময় ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে আয়োজিত দোয়া, মিলাদ ও আলোচনা সভায় এদাবি জানানো হয়; অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ।

ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত গাজীপুর-২ আসনের এমপি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো: জাহিদ আহসান রাসেল, হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এডভোকেট মো: আবু জাহির, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিরা বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা পলাতক খুনিদের দেশে ফেরত পাঠাতে কাজ করুন।

তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যেদিন দেশে ফিরতে পারছিলেন না তখন আপনারা প্রবাসীরা তার সফরসঙ্গী হয়েছিলেন। তিনি নিজ হাতে রান্না করে খাইয়েছিলেন আপনাদের। জননেত্রীর উন্নয়ন দর্শন আজ বিশ্বের রোল মডেল। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও কেনিয়া গিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলেছিলেন।

এডভোকেট মো: আবু জাহির এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন। শুধু দেখতেনই না তা বাস্তবায়নও করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ’৭৫ এ দল বিশাল ছিল কিন্তু আওয়ামী লীগ টলটলায়মান হয়ে পড়েছিল। আজও দলে লোকের জায়গা দেয়া যাচ্ছে না। সকলকে সাবধান হতে হবে যাতে জননেত্রীকে কোন অপশক্তি স্পর্শ করতে না পারে। তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে বর্তমান সংসদ সজাগ আছে। সংবেদনশীল এ বিষয়টা আমরা দেখব।

তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শোককে শক্তিতে পরিণত করতে আগামী নির্বাচনের আগে দেশে আসুন, কাজ করুন যাতে দল আবার ক্ষমতায় আসতে পারে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। জাতির পিতার জীবন ও আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সগৌরবে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ।

অন্যান্য বক্তারা যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের অবিলম্বে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্যে মার্কিন প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।

এছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আকতার হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, সৈয়দ বসায়ত আলী ও লুৎফুল করিম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, আইরিন পারভিন, উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জণ কর, ডা. মাসুদুল হাসান, নূরে আজম বাবু, আব্দুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল হাসিব মামুন, আব্দুর রহিম বাদশা ও চন্দন দত্ত, কোষাধ্যক্ষ আবুল মনসুর খান, প্রচার সম্পাদক হাজি এনাম (দুলাল মিয়া), দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, জনসংযোগ সম্পাদক কাজী কয়েস, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল খান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গীর, আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ বখতিয়ার, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান বজলু, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহ আহমেদ, যুব বিষয়ক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান টুকু, উপ দপ্তর সম্পাদক, আবদুল মালেক, জহিরুল ইসলাম, তৈয়বুর রহমান টনি, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সম্পাদক শাহীন আজমল, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আকতার হোসেন, কার্যকরী সদস্য ডেনী চৌধুরী, আশরাফ মাসুক, মুজিবুল মাওলা, সামছুল আবেদীন, আলী হোসেন গজনবী, কামাল আহমেদ, খোরশেদ খন্দকার, আতাউল গনি আসাদ, করিম চৌধুরী, শরীফ কামরুল আলম হীরা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন আক্তার দীবা, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি একেএম আলমগীর, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী ও সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন, কফিল উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক শিবলী, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম, শেখ আতিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা লীগের সভাপতি শাহনাজ মমতাজ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাখাওয়াত বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদা আরভী, যুবলীগ নেতা সেবুল মিয়া, হুমায়ূন চৌধুরী, গণেশ কীর্তনিয়া, রাহিমুজ্জামান সুমন, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন, সহ সভাপতি খান শওকত, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নূরজ্জামান সরদার, সহ সভাপতি দরুদ মিয়া রনেল, কবির আলী, গোলাম কিবরীয়া প্রমুখ।

গভীর রাত পর্যন্ত চলা এ সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত, মিলাদ ও দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কায়্যূম। মিলাদে ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেসা মুজিব ও অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেও দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করা হয়।

সভাপতির ভাষণে শামসুদ্দিন আজাদ রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত জাতীয় শোক দিবসের দোয়া, মিলাদ ও আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত