সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ ফেব্রুয়ারি , ২০২২ ০৯:৪৪

হিমেলের নামে হবে একাডেমিক ভবনের নামকরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন নতুন একাডেমিক ভবনের নামকরণ মাহমুদ হাবিব হিমেলের নামে করার আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। হিমেল ট্রাক চাপায় নিহত হন। তার মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে।

বুধবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত উন্মুক্ত আলোচনায় উপাচার্য এই ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া হিমেলের মাকে প্রতিমাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করারও ঘোষণা দেন তিনি।

গত মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেলে হবিবুর হলের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী একটি ট্রাকের চাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী হিমেল নিহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন; অন্তত পাঁচটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করেন। রাতভর তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ও মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন।

তাদের দাবির মুখে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর লিয়াকত আলীকে অব্যাহতি দিয়ে আসাবুল হককে নতুন প্রক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করেছে। পুলিশ ওই ট্রাকের চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকালে সাবাস বাংলাদেশ প্রাঙ্গণে উপাচার্যের সঙ্গে হিমেলের সহপাঠী ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের আলোচনা অনুষ্ঠান হয়।

এখানে তারা আরও কয়েক দফা দাবি উত্থাপন করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে হিমেলের পরিবারকে ন্যূনতম পাঁচ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা করা, শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফটকের সামনে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা, ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, দুর্ঘটনায় জড়িত সকলের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা, রাস্তা মেরামত করে উপযোগী না করা পর্যন্ত সকল নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা, নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধে রহমতুন্নেছা হলের পাশ দিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে রাস্তা সচল করা, দ্রুত রাকসু নির্বাচন ও শিক্ষার্থীদের মতামতের জায়গা তৈরি করা।

উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এসব দাবির মধ্যে প্রায় দাবিগুলোর সঙ্গেই সহমত জানিয়ে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।

তবে পাঁচ কোটি টাকা সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, “এই পাঁচ কোটি টাকা প্রদানের সামর্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ড থেকে একটি অ্যামাউন্ট আনার চেষ্টা করব, যাতে মাসখানিকের মধ্যে তিনি যেন প্রতিমাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা পান। আপাতত তার মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।”

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডেসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৩০০-৩৫০ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত