সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ মে, ২০২৪ ১১:৪৭

যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যাপক নাদিরকে অব্যাহতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি।

মঙ্গলবার (৭ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরে সিন্ডিকেট অভিযোগটি অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন-নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠিয়েছে। সেল বিষয়টি দুই মাসের মধ্যে তদন্ত করে সিন্ডিকেটের প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদিরকে সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে আনা এক ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। অভিযোগটি যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে।

সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সিন্ডিকেটের একজন সদস্য বলেন, ওই দুই শিক্ষককেই সিন্ডিকেটের তারিখ থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, অধ্যাপক নাদিরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে। এই তদন্তে শেষ হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপক নাদিরকে সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলকে তদন্ত করতে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সোমবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক নাদিরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন দিনের আলটিমেটাম দেয়। সিন্ডিকেট সূত্র জানায়, ‘শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিন্ডিকেটকে চাপ প্রয়োগ করছে উল্লেখ করে অধ্যাপক নাদির জুনাইদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) বরারব চিঠি দিয়েছিলেন।’

এর আগে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী অধ্যাপক নাদিরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন। ১১ ফেব্রুয়ারি বিভাগের আরেক নারী শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে মৌখিক যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীও তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গত ৩ মার্চ তদন্ত কমিটি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্য বিশিষ্ট ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন।

এ ছাড়া চলতি বছরের গত ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশে ফলে ধস নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত