সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ আগস্ট, ২০১৬ ১৮:৩৫

লিডিং ইউনিভার্সিটিতে জঙ্গিবাদ বিরোধী কর্মসূচী পালিত

সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে সোমবার (১ জুলাই) সকাল ১১টায় “জঙ্গীমুক্ত শিক্ষাঙ্গন ও সমাজ গড়াই হোক আমাদের অঙ্গীকার” ব্যানারে মানববন্ধন ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মানববন্ধনটি লিডিং ইউনিভার্সিটির সুরমা টাওয়ার ক্যাম্পাসের সম্মুখস্থ তালতলা রোড এবং রংমহল টাওয়ার ক্যাম্পাসের সম্মুখস্থ বন্দরবাজার রোড এবং র‍্যালিটি সুরমা টাওয়ার ও রংমহল টাওয়ার হতে মধুবন পয়েন্ট-জিন্দাবাজার পয়েন্ট-শহীদ মিনার হয়ে লামাবাজার,কাজীর বাজার পয়েন্ট হয়ে সুরমা টাওয়ার ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়েছে।

র‌্যালী পরবর্তী “সন্ত্রাস ও জঙ্গীমুক্ত শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিতকরণ” শীর্ষক এক আলোচনা সভা লিডিং ইউনিভার্সিটির সুরমা টাওয়ার ক্যাম্পাসের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধন, র‌্যালী ও আলোচনা সভায় লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরীসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনায় লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, জঙ্গীবাদ যেন আমাদের শিক্ষাঙ্গনকে আক্রান্ত করকে না পারে এবং শিক্ষার্থীদের যেন দু:স্কৃতিকারীরা প্রভাবিত করতে না পারে সে জন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তাদেরকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও অনেক ভূমিকা রয়েছে. অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানদের প্রতি আরো সচেতন ও মনোযোগী হতে হবে এবং বেশী বেশী সময় দিতে হবে। জঙ্গীবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা।  কিছু কিছু বিপথগামী তরুণরা উগ্রবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে লিডিং ইউনিভার্সিটি জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে এ ঘোষণা করে উপাচার্য আরো বলেন- আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বিজ্ঞান ভিত্তিক ও গবেষণামূলক শিক্ষা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্তমান সরকারের ভিশন-২১ বাস্তবায়ন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন প্রফেসর মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার লে: কর্ণেল মুনীর আহমেদ কাদেরী (অব.), সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ, সকল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রক্টর ও প্রত্যেক বিভাগ থেকে ২ জন করে শিক্ষার্থী। লিডিং ইউনিভার্সিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো: কাওসার হাওলাদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তারা গত ১ জুলাই ২০১৬ ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর ঘটনায় প্রতি তীব্র ঘৃণা জানিয়ে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমাজকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে অঙ্গীকার করার আহবান জানান।

শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে ধর্মের অপব্যাখ্যায় প্ররোচিত হয়ে জঙ্গীবাদ লালন ও সন্ত্রাসবাদ কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে না জড়িয়ে সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আমরা ব্রিটিশ আন্দোলন, অভ্যুত্থান, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি তেমনি ভাবে ধর্মীয় মৌলবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার আগ্রাসনও দূর করতে পারবে। জঙ্গীদেরকে তাদের পরিবার, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রও যেমন মেনে নেয় না তেমনিভাবে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য আজ আমরা অবহেলিত, তুচ্ছতাচ্ছিল্য হচ্ছি, সে ব্যাপারে আমাদেরকেই সচেতন হতে হবে।

পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে খেলাধুলা, বিনোদন ও এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও মননশীল করতে সহায়তা করে। এ ব্যাপারে লিডিং ইউনিভার্সিটিতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা করে দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীরা অনুরোধ জানান।

শিক্ষকগণ তাদের বক্তব্যে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শুধু লিডিং ইউনিভার্সিটি কেন সিলেটেও জঙ্গীবাদের প্রসার হবে না। জঙ্গীবাদ শিক্ষার্থীদের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেবে না তা আমরা যেমন বিশ্বাস করি তেমনিভাবে ছাত্রছাত্রীরাও তা জানে। স্বাস্থ্যশিক্ষা এবং যোগাযোগ বিষয়টি শুধুমাত্র জনস্বাস্থ্য বিভাগে অন্তর্ভুক্ত না রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ মানসিক সুস্থতা জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। শান্তিপূর্ণভাবে ছাত্রছাত্রীরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে মোকাবেলা করে আলোকিত সমাজ গড়ে তুলবে।

সভাপতি তার বক্তব্যে মানববন্ধন, র‌্যালী ও আলোচনা সভায় লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, জঙ্গীবাদ শুধু সিলেট থেকে নয় সারাদেশ থেকে দূর হয়ে যাবে। সন্ত্রাসের জনকই সন্ত্রাসে বিপদগ্রস্থ। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস রুখতে মূল হাতিয়ার হল পরিবার, সঠিক ধর্মশিক্ষা ও সমাজ ব্যবস্থাপনা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত