শাবি প্রতিনিধি

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৭:৫৮

শাবিতে আবাসিক হল ‘বন্ধ ঘোষণা’ প্রথায় পরিণত হয়েছে

কয়েক বছর ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা যেন প্রথায় পরিণত হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ, বিভিন্ন দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন হলেই তার সমাধান না করে হল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য হল এবং ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০১৩ সালের ১৩ মে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের কারণেও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উত্তম কুমার দাশ।

ঘটনার পরের দিন জরুরী সিন্ডিকেট ডেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই বছরের ২০ নভেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে সুমন চন্দ্র দাস নামে বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হন। ওই দিনই জরুরী সিন্ডিকেট ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনার পর ক্যাম্পাস প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকে।

সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের একদিন পর সিন্ডিকেট সভা ছাড়াই হল বন্ধের নির্দেশ দেন ভিসি অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভুঁইয়া।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্র সংগঠন ছাড়াও সব থেকে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণেই ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাদের। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রশাসনের দুর্বল নীতির কারণেই বারবার এমনটি হচ্ছে।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত বিশ্বাস বিভু বলেন, এই পর্যন্ত যতবার অনাকাঙ্ক্ষিত বন্ধ কিংবা ছুটির কবলে পড়েছে দেখা যায় প্রত্যেকটির পেছনে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভূমিকা আছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরে থাক বরং তাদেরকে রক্ষা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে।

শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, সমস্ত ঘটনায় ছাত্রলীগকে দায়ী করা ঠিক হবেনা। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেব।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলম বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলে হল বন্ধ করা কখনোই কাম্য নই। বর্তমান ভিসির একপেশে মনোভাবের কারণে প্রশাসন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। যে কোন সংকটকালীন মুহূর্তে শিক্ষক সমিতির কোন মতামত নেওয়া হয়না বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদারকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত