সিলেটটুডে প্রতিবেদন

০৬ জানুয়ারি, ২০১৫ ২০:৪০

শাবি বন্ধের দেড়মাস: শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ আর হতাশা

গত ২০ নভেম্বর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) কবে খুলবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর অনিশ্চয়তা

গত ২০ নভেম্বর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) কবে খুলবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর অনিশ্চয়তা ।  গণমাধ্যম-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার  সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ক্যাম্পাস খোলার দিন তারিখ জানতে পারেননি। কর্মকর্তাদের কেউই সুনির্দিষ্টভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর তারিখ  জানাতে পারছেন না   । এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে পূর্বনির্ধারিত সিন্ডিকেট সভা মঙ্গলবার অজানা কারণে  স্থগিত করে আগামী ১০ জানুয়ারি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো পদ খালি থাকায় ক্যাম্পাস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েও দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে বলে সিনিয়র শিক্ষকরা জানান।

জানা যায়, শাবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর প্রায় দেড়মাস ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে। এতে হতাশ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা । কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের হতাশার কথাও জানাচ্ছেন ।

পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র রূপম ভট্টাচার্য তাঁর ফেসবুক পোষ্টে লিখেছেন -
"বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলে ক্লাস হয়না,পরীক্ষা হয়না। তাহলে শিক্ষকেরা বেতন নিবেন কি জন্যে? শিক্ষক কমিটির নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্যে??একটা বিশ্ববিদ্যালয় দেড় মাস ধরে বন্ধ,শিক্ষকদের কোন মাথা ব্যথাই নাই। ক্লাস, পরীক্ষার মতো যদি উনাদের বেতনও বিশ্ববিদ্যালয় যতদিন বন্ধ থাকবে ততোদিন বন্ধ থাকতো তাহলে ঠিকই উনারা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার তাড়না অনুভব করতেন।"


নৃবিজ্ঞান ৪র্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা সিলেটটুড২৪.কম কে বলেন , - " সময়মত শিক্ষাজীবন শেষ না হলে  চাকরীর বয়স তো আর থেমে থাকবে না . ক্যাম্পাসের সব প্রশাসনিক কাজ চলছে কেবল শিক্ষার্থী নেই, কিচ্ছু বলার নাই, আমাদের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে"


বাহাউদ্দিন নামের গণিত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের  একজন শিক্ষার্থী লিখেছেন   - "আর তো ভালো লাগতেছে না.....৪/১ এর শেষ এক্সাম দিছি ৬ নভেম্বর,আর আজ ৬ জানুয়ারি,এখনো অনেক এক্সাম বাকি,কবে যে ৪/১ শেষ হবে....কিছু করা উচিত আমাদের"

রিদওয়ান ইসলাম হৃদয় নামে অপর আরেক শিক্ষার্থী ভিসির পদত্যাগ দাবি করে লিখেছেন - 'আমাদের দাবি একটাই , সাস্ট খোলার দরকার নাই, নতুন একজন ভিসি চাই' ।

প্রসঙ্গত দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম সেশন জট নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখায় সুনাম ছিলো এ বিশ্ববিদ্যালয়ের । রাজনৈতিক অস্থিরতায় সে সুনামও আজ হারিয়ে যেতে বসেছে । সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের দুই গ্রুপের সংঘাতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হওয়াকে সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা । এজন্য অনেকেই বর্তমান ভিসির অদক্ষতাকে দায়ী করেছেন ।  শিক্ষার্থী , অভিভাবক, শিক্ষাবিদরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জন্য  শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।



আপনার মন্তব্য

আলোচিত