রাবি প্রতিনিধি

১১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৭:৪৫

‘হৃদরোগে’ রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগের আবু সাইদ (২০) নামে এক শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি মারা যান।

আবু সাইদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশঙ্কর উপজেলায়।

সহপাঠীরা জানান, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে আমরা একসঙ্গে ২০-২৫ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার এক দোকানে খাওয়া-দাওয়া করি। খাওয়া শেষে বিভাগে আসলে সাইদ বলে, আমি দুই প্লেট ভাত খেয়েছি। এখন আমার পেট জ্বলছে। এ সময় সাইদ নিজের কাছে থাকা একটা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খায়। অবস্থার উন্নতি না হলে রাবির মেডিকেল সেন্টারে যায় সে।

তার সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা জানান, রাবি মেডিকেলে তাকে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়। সেখানে সাইদ প্রায় এক ঘণ্টা ছিল। এরপর বিভাগে চলে আসি আমরা।

বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, ওর দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘নির্বাসন দণ্ড’ নাটকটি প্রদর্শন হয়। সেখানে সাইদের অভিনয় করার কথা ছিল। যেহেতু সাইদ অসুস্থ তাই তাকে জিজ্ঞাসা করি তুই প্রোডাকশনে কাজ করবি কি না? ও বলে, হ্যাঁ ভাইয়া করবো। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নাটক শুরু হয়, শেষ হয় সাড়ে ৮টায়।

এরপর আবার সে বলে, আমার ভালো লাগছে না। এ সময় তাকে আবার রাবি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান চিকিৎসক তার আগের ব্যবস্থাপত্র দেখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা বলেন, রামেক এ ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসকরা তিন ধরনের ঔষধ দেয়, সঙ্গে একটা ইনজেকশন। ইনজেকশন ও ওষুধ খাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে সাইদ ঘুমিয়ে যায়। এর মধ্যে সে দুই-তিনবার জেগে উঠে। রাত ৪টার দিকে হঠাৎ আমরা সাইদের অদ্ভুত শব্দে জেগে উঠি। আমরা দেখি সে বমি করছে। এর মধ্যে ইন্টার্ন ডাক্তার এসে একটা ইনজেকশন আনতে দেয়। ইনজেকশন আনার আগেই সাইদ মারা যায়।

এ বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়েছে।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃতদেহ আনার পর সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

‘দুপুরে শিক্ষার্থীরা তাঁকে তার গ্রাম ঠাকুরগাঁও নিয়ে যাচ্ছে। আমরাও বিভাগে এ নিয়ে মিটিং করছি’ বলে জানান ড. শাহরিয়ার হোসেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত