রাবি প্রতিনিধি

২০ মার্চ, ২০১৭ ২১:১৩

রাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাবি শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

সোমবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় তারা এ কাজ বন্ধ করে দেয় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল শাখার এক উচ্চমান সহকারি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভা বানচাল করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে রাবি ছাত্রলীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।

কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ৬০-৭০ জন ছাত্রলীগকর্মী এসে ঢুকে গ্রন্থাগারের মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। তারা কর্মচারীদের মুক্তিযুদ্ধের কর্নার নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে বলে। তাদের কথা শুনে কর্মচারিরা কাজ বন্ধ করে চলে যান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, "আমাদের ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মী গ্রন্থাগারের কাজ বন্ধ করেনি। আমাদের লোকজন গেলে আমরা জানতাম, কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।"

গ্রন্থাগার প্রশাসক ড. শফিকুন্নবি সামাদী বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রের কাজ চলছিলো। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আমাকে অফিস থেকে ফোন করে জানানো হয়, কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কর্মচারিরা অনুমান করছে তারা ছাত্রলীগ।"

তিনি আরো বলেন, "আমার কথা হচ্ছে, শেখ হাসিনা সরকার এতো চেষ্টা করছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করার। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র হচ্ছে। সেটা বন্ধ করে দিচ্ছে। এখন কোথায় যাই! এখন তো প্রশাসনও নাই, কার কাছে বলব? এখন মনে হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করাও পাপ!"

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভা বানচাল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাবি ছাত্রলীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কেনা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের দেওয়া রুলের জবাব কিভাবে দিবেন- সে বিষয়ে আলোচনা করতে রেজিস্ট্রার এক সভার আহ্বান করেন। সেখানে রেজিস্ট্রার ঢুকতে পারলেও অন্যরা রাজশাহীর স্থানীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে ঢুকতে পারেননি। ফলে সভা হয়নি।

তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ও মতিহার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

সভা পণ্ড হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য চৌধুরী প্রফেসর সারওয়ার জাহান বলেন, "এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি।"

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কেনায় অনিয়মের অভিযোগে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে কেন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এক শিক্ষার্থীর করা আবেদনের শুনানি শেষে গত ১৪ মার্চ বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের আইজি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজকের এই সভা ডাকা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত