রাবি প্রতিনিধি

০৯ এপ্রিল, ২০১৭ ১৬:৪১

‘শব্দ কল্প দ্রুম’ এর আয়োজনে মজার প্রশ্নের মজার উত্তর

‘আমরা যখন ‘খাই’ বলি, তখন এর অতীত বোঝাতে বলি-‘খেয়েছিলাম’ ‘বলি’ থেকে হয় ‘বলেছিলাম’ তাহলে ‘যাই’ থেকে কেন ‘গিয়েছিলাম’ বলতে হয় ‘য’ কী দোষ করল’ এমন অদ্ভুত প্রশ্ন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফাহমিদ হোসাইনের। ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী!’ গানটিতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশের জন্মের আগে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি কোথায় পেলেন এ প্রশ্ন রাজশাহী মডেল স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী মাহবুবা সাঈদ সিনথিয়ার।

এমন সব মজার মজার প্রশ্নের স্রোতে ভাসলেন প্রখ্যাত লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং সবার প্রশ্নের উত্তরও বেশ মজা করে দেন তিনি।

শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজশাহীতে ‘শব্দ কল্প দ্রুম’ অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীরা জাফর ইকবালকে বাংলা ভাষা ও শব্দ নিয়ে এমন মজার মজার অসংখ্য প্রশ্ন করেন।

রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর আগে সকালে প্রশ্ন দিয়ে শিক্ষার্থীদের এক ঘণ্টার একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়।

সেখানেও প্রশ্নপত্র ছিলো রসে ভরা। ‘পাশে গ্লাস রেখেও যারা বোতলে মুখ লাগিয়ে পানি খায়, তাদের কী বলে’ উত্তরে শিক্ষার্থীরা বলেছে, ‘বোতলচুম্বি’ ‘যারা স্কুলে যায় কিন্তু স্কুলের ব্যাগ থাকে বাবা-মায়ের কাঁধে, তাদের কী বলে’ শিক্ষার্থীরা বলেছে-‘ডোনাল্ড ট্রাম্প, ‘রাজাকারের ফাঁসি দেখে যাদের মন খারাপ হয়, তাদের কী বলে’ শিক্ষার্থীরা লিখেছে-‘রাণীকার’।

প্রশ্ন ছিল-‘যে শিক্ষক গাইড বই দেখে ক্লাসে অঙ্ক পড়ান, তাকে কী বলে’ শিক্ষার্থীরা বলেছে- ‘গাইডিস স্যার’ ‘সামনে স্যারদের সালাম দিয়ে পেছনে যারা ভেঙচি কাটে, তাদের কী বলে’ এর উত্তরে শিক্ষার্থীরা বলেছে-‘তারা স্কুলের গডফাদার’ ‘যারা পড়াশোনা না করেও জ্ঞানীর ভাব নেয়, তারা কে’ উত্তরে শিক্ষার্থীরা লিখেছে- ‘ছাগল’।

এভাবেই হাসতে হাসতে শিক্ষার্থীরা দিনভর মেতে ওঠে শব্দের খেলায়। শুধু হাসিই নয়, নতুন মজার কিছু শব্দেরও উদ্ভাবন করে তারা।

সকাল সাড়ে ৯টায় বেলুন উড়িয়ে ‘শব্দ কল্প দ্রুম পিপীলিকা বাংলা উৎসব’ নামের এই উৎসবের উদ্বোধন করেন লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। উৎসবের এবারের শ্লোগান ছিল-‘বাংলা নিয়ে নানান খেলা সারাবেলা’।

এ আয়োজনে দুপুরে একটি আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয় সেখানে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাবেক মহাপরিচালক শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম, এটুআই প্রকল্পের প্রোগ্রামার রফিকুল ইসলাম সুজন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ ইকবাল ও শব্দ কল্প দ্রুম’র অ্যাকাডেমিক ডাইরেক্টর জফির সেতু বক্তব্য দেন। রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. নূরজাহান বেগম এতে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও প্রশ্নোত্তর পর্বের মাঝে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। পরে বিকেলে তিন পর্বের বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই উৎসবে যোগ দেয়। প্রিয় লেখককে কাছে পেয়ে তারা সবাই অটোগ্রাফের আবদার করে বসে।

দুপুরে অনুষ্ঠানের বিরতির সময় লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীকে অটোগ্রাফ দেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবকসহ অনেক শিক্ষার্থীই মেতে ওঠে তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলায়।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত