শাবি প্রতিনিধি

১০ এপ্রিল, ২০১৭ ১৯:২৩

শাবিতে সাংবাদিক পেটানো ও যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের বহিষ্কারের দাবি

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাংবাদিকদের সংগঠন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরাম।

সোমবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, শাবিতে ঘুরতে এসে ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় বখাটের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়া ছাত্রী। এঘটনার প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন শাবি প্রেসক্লাবের দু’জন সাংবাদিক নেতা।

শনিবার সন্ধ্যায় এই হামলার ঘটনায় এমন সংবাদই পত্রিকা মারফত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সারাদেশে যখন নারী নিপীড়নের ঘটনায় সরকার জিরো টলারেন্সে রয়েছে, তখন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত হয়েছি।

আমরা আশ্চর্য হয়েছি এটা জেনে যে, ওই হামলা এবং যৌন হয়রানির বিষয়টি জানার পরও নিজ কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ। বরং তিনি তাদের পক্ষ নিয়েছেন। এমনকি ঘটনার প্রতিবাদকারী সাংবাদিকদের উপর হামলা চালাতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। এর আগেও তার সমর্থিত কর্মী, সংগঠনটির বহিষ্কৃত সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের চাপাতির কোপে এমসি কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তারের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা সারাদেশকে নাড়া দিয়েছিল। ওই সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগতো বটেই, সরকারের উর্ধতন ব্যক্তিরা খাদিজার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শাবি ছাত্রলীগের একই ধরণের কর্মকান্ডে আমরা ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি। পাশাপাশি ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর এসব সন্ত্রাসী কান্ডে সরকারের কষ্টার্জিত ইমেজ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এটা কোনভাবেই কারো কাম্য নয়।

আর তাই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের বখাটে কর্মীদের এবং ঘটনার ইন্ধনদাতার কঠোর শাস্তি দাবি করছি আমরা। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনবে। পাশাপাশি এইসব বখাটে নেতা এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। অবিলম্বে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার না করলে এনিয়ে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।

বিবৃতি দিয়েছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের বিজনেস এডিটর ফারুক মেহেদী, এসএ টিভির নিউজরুম এডিটর মুস্তফা মনওয়ার সুজন, দৈনিক সমকালের জয়েন্ট নিউজ এডিটর রমাপ্রসাদ সরকার বাবু, আরটিভির বিশেষ প্রতিনিধি ফারুক খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ডেপুটি নিউজ এডিটর সঞ্জয় তরফদার, প্রথম আলোর কুমিল্লার স্টাফ রিপোর্টার গাজীউল হক সোহাগ, যমুনা টিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের সদস্য সচিব ও দৈনিক যুগান্তরের মফস্বল সম্পাদক নাঈমুল করীম নাঈম, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সুমন তালুকদার, আলোকিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রিপোর্টার মো. জাহিদুল ইসলাম, বাংলা নিউজের নিউজরুম এডিটর তাহজীব হাসান, দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্টার আবু তাহের টোটন, জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহ-সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম টিটু, দৈনিক যুগান্তরের সহ-সম্পাদক গাজী সাদেক, দৈনিক শেয়ার বিজের স্টাফ রিপোর্টার হাসান আদিল, শাবি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তৌহিদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ইমাম হাসান মুক্তি।

উল্লেখ্য,গত ৮ এপ্রিল এক ছাত্রীকে লাঞ্ছনা করার প্রতিবাদ ও খবর সংগ্রহের সময় বখাটদের ছবি তোলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহসভাপতি সৈয়দ নবিউল আলম দিপু এবং সাধারণ সম্পাদক সরদার আব্বাসকে পিটিয়ে আহত করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের অনুগত কর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত