শাবি প্রতিনিধি

২৭ জুলাই, ২০১৭ ১৫:৩৬

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘কটূক্তি’, শাবি শিক্ষকের পদাবনতি

ফেসবুকে আগস্ট মাস নিয়ে ‘কটূক্তি’ করে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল হায়দার সুমনকে (সুমন আখন্দ) প্রভাষক পদে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) শাবি রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রেজিস্ট্রার বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষককে ছয় মাসের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটি এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।’

শাবি সিন্ডিকেটের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন জানান, বুধবার (২৬ জুলাই) বিকালে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছয় মাসের ছুটি ও পদাবনতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মঞ্জুরুল হায়দার সুমন বলেন, ‘আগস্ট মাসে আমার ব্যক্তিগত কয়েকটি ইভেন্ট থাকায় আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই। আর সেই স্ট্যাটাস নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলে আমি তা ডিলিট করে দেই। আমি আগস্ট মাসকে নিয়ে কোনও কটূক্তি করিনি।’

এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করবেন বলে জানান তিনি।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল হায়দার সুমন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘দিন গুনছি... আসছে আমার আনন্দের আগস্ট।’ এ নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে ঢুকে এ শিক্ষকের রুমের জানালা ও নেমপ্লেট ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। পরে স্ট্যাটাসটি ডিলিট করে দেন ওই শিক্ষক।

মঞ্জুরুল হায়দার সুমনের ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর গত ১৮ জুলাই ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দের ফোরাম’র পক্ষ থেকে শাবি রেজিস্টার বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল।

উল্লেখ্য, এরআগে একাধিকবার এশিক্ষকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে অপপ্রচারমূলক কটূক্তির অভিযোগ উঠেছিল। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিল।

২০১৩ সালের ৫ মার্চ ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গশত্রু, রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে উল্লেখ করে পোস্ট দেন। এছাড়াও আরও কিছু আপত্তিকর মন্তব্যসহ বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতি করে একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন বলেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাসের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিল। স্মারকলিপিতে তারা সুমন আকন্দকে চাকরিচ্যুত এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। এবং একই দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে অভিযুক্ত শিক্ষকের কুশপুতুলও পোড়ায় ছাত্রলীগ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত