শাবি প্রতিনিধি

১৭ জুলাই, ২০১৭ ১৭:০১

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘কটূক্তি’, শাবি শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে ছাত্রলীগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) এক শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির নেতাকর্মীরা। অভিযুক্ত নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঞ্জুরুল হায়দার সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন স্থগিত কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বলছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করে তিনি কোনো কিছইু লিখেন নি।’

জানা যায়, মঞ্জুরুল হায়দারের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে (সুমন আখন্দ) ‘দিন গুনছি... আসছে আমার আনন্দের আগস্ট’ শীর্ষক পোস্টটি দেখার পর সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় একাডেমিক ভবন ‘ডি’তে ঢুকে নীচতলায় ১০০৯ নং কক্ষের গ্লাস ভাঙচুর ও নেমপ্লেট খুলে ফেলেন বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। তবে এসময় মঞ্জুরুল হায়দার সুমন কক্ষে ছিলেন না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে শিক্ষক মঞ্জুরুল হায়দার সুমন বলেন, ‘গত শনিবার বিকালে আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই। সে স্ট্যাটাসটিতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কোন কটূক্তি করিনি। আর আগামী আগস্ট মাসেই আমার ও আমার স্ত্রীর জন্মদিন এবং জার্নালে একটা আর্টিকেল প্রকাশের কথা রয়েছে। সেই ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ করতেই এই স্ট্যাটাসটি দেওয়া হয়। পরে আমার এক সহকর্মী বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হতে পারে বলায় আমি পোস্টটি মুছে দেই।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শাবি ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘শিক্ষক সুমন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় আমরা তার কক্ষে গিয়ে তাকে পাইনি। তাকে না পাওয়ায় তার নেমপ্লেট ভাঙচুর করেছি। এর আগেও এই শিক্ষক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন। তাই আমরা উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

উল্লেখ্য, এরআগে একাধিকবার এশিক্ষকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে অপপ্রচারমূলক কটূক্তির অভিযোগ উঠেছিল। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিল।

২০১৩ সালের ৫ মার্চ ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গশত্রু, রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে উল্লেখ করে পোস্ট দেন। এছাড়াও আরও কিছু আপত্তিকর মন্তব্যসহ বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতি করে একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন বলেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাসের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিল। স্মারকলিপিতে তারা সুমন আকন্দকে চাকরিচ্যুত এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। এবং একই দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে অভিযুক্ত শিক্ষকের কুশপুতুলও পোড়ায় ছাত্রলীগ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত