নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ০১:৩৫

প্রদর্শনীতে আগামীর স্থাপত্যভাবনা

সিলেট নগরীর ঐতিহাসিক স্থাপনা সুরমা নদীর উপর বৃটিশ আমলে নির্মিত কীন ব্রিজ। প্রাচীন এই স্থাপনাটি দীর্ঘদিন ধরেই নড়বড়ে হয়ে আছে। জোড়াতালি দিয়ে চলছে। ভারি যানবাহন যাতায়াতও বন্ধ করা হয়েছে।

কীনব্রিজটি পুননির্মিত হলে কেমন হবে তার চেহারা, এর একটি স্থাপত্য নকশা তৈরি করেছে একজন শিক্ষার্থী। কেবল কীনব্রিজ নয়, আশপাশের সুরমা তীরের ওয়াকওয়েসহ কীনব্রিজ এলাকার সৌন্দর্যবর্ধনে আরও কিছু স্থাপনা রাখা হয়েছে এই নকশায়।

আরেকটি স্থাপত্য কর্মে দেখানো হয়েছে- নগরীর কবি নজরুল অডিটোরিয়াম পুননির্মিত হলে তার চেহারা কেমন হতে পারে।

ঐতিহাসিক স্থাপনা ও নগর পরিকল্পনামূলক স্থাপত্য ভাবনা নিয়ে সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটিতে চলছে ‘স্থাপত্য সপ্তাহ’ নামের সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনীর। এই প্রদর্শনীতেই ঠাঁই পেয়েছে কীন ব্রিজ আর কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের নতুন রূপের ভাবনা।

প্রদর্শনীতে তাজমহল, সংসদ ভবন, হুমায়ুনের সমাধির মতো  স্থাপত্যকর্মের নকশাও ঠাঁই পেয়েছে। কেমন হবে আগামীর নগর? এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রার্থনাগৃহ, সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের চেহারা কেমন হবে?- এসব পরিকল্পনা থেকেও বেশ কয়েকটি নকশা রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এছাড়া বিশ্বের খ্যাতিমান স্থপতিদের বিখ্যাত স্থাপত্যকর্মগুলোও নিজেদের মতো তৈরি করেছে লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। যা প্রদর্শন করা হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী এই প্রদর্শনীতে। সর্বমোট ২৪১ টি প্রকল্প ঠাঁই পেয়েছে এ প্রদর্শনীতে।

১১ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রংমহল টাওয়ার ক্যাম্পাসে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার স্টুডেন্ট কমিউনিটি। যা চলবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে এ প্রদর্শনী।

আয়োজকরা জানান, স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রকল্পগুলো নিয়েই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রথম থেকে ৫ম বর্ষের স্থাপত্য শিক্ষার পর্যায়ক্রমিক নন্দনতাত্তিক ও বিজ্ঞানমনস্ক বিষয় পাঁচটি স্তরে সাজানো হয়েছে। মৌলিক, দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক নকশা থেকে শুরু করে স্থাপত্যবিজ্ঞান ও দর্শনের ভিত্তিতে নির্মিত ছোট থেকে বড় পরিসরের প্রকল্প এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনিম আক্তার বলেন, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারটি স্থানান্তর করে উন্মুক্ত উদ্যান নির্মাণ করা হবে। এই উদ্যানটি কেমন হতে পারে তারও একটি নকশা আছে প্রদর্শনীতে। তিনি বলেন, সিলেটসহ দেশের কোথাও পরিকল্পিত নগরায়ন হচ্ছে না। এই প্রদর্শনী থেকে ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি হবে বলে আমরা মনে করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্থপতি রাজন দাশ বলেন, ঐতিহাসিক এবং সমকালীন স্থাপত্যের সঙ্গে নগরবাসীকে পরিচয় ঘটানো ও এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি লক্ষ্যেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ১ম থেকে ৫ম বর্ষ পর্যন্ত স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা কী ধরণের কাজ করে সে সম্পর্কেও দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে এসে ধারণা পাবেন।

এ প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থীরা পরিকল্পিত ও নান্দনিক স্থাপত্য ও নগর গড়ে তুলতে উদ্যোগী হবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত