রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

১৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ২৩:২৯

অস্ত্র ঠেকিয়ে রাবি শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ ও মোবাইল লুট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক শিক্ষার্থীর কক্ষে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্বস্থ মেহেরচণ্ডী মধ্যপাড়া এলাকার হালিমা ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী রায়হান উদ্দিন ফকির বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। রোববার তার থিসিস জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল। ল্যাপটপ লুট হওয়ায় থিসিস জমা দিতে পারেন নি তিনি।

ঘটনার বরাত দিয়ে রায়হান বলেন, “১১ জানুয়ারি রাত আনুমানিক দুইটার দিকে আমার রুমের দরজায় একজন নক করে পাভেল পরিচয় দেয়। পাভেল আমার বিভাগের ছোট ভাই হওয়ায় আমি দরজা খুলে দেই। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আমার বুকে বন্দুক ধরে জোর করে রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয় অর্ধ-মুখ ঢাকা দুই জন। তারা আমাকে বলে ‘চিৎকার করলে লাশ ফেলে দিব’। পরে আমাকে ল্যাপটপ বের করতে বলে।”

“আমি ভয়ে মুখ ফুটে কিছুই বলতে সাহস পাই নি। ঘটনার সময় তাদের একজন কাকে যেন ফোন করে বলে, ‘পাভেল তোরা ভিতরে আয়’। কিন্তু কেউ আসে না। তারা আমার একটি ল্যাপটপ ও একটি স্যামস্যাঙ মোবাইল নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যায়।”

এ ঘটনায় গত শুক্রবার দুপুরে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন রায়হান। সেইসঙ্গে ঘটনায় সম্পৃক্তদের মধ্যে হাসিব নামে একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছেন বলে দাবি করেন তিনি। হাসিবের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে, কড়ইতলা স্কুলমোড় এলাকায়। তার বাবার নাম রফিকুল। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বলে জানান রায়হান।

কীভাবে শনাক্ত করলেন জানতে চাইলে রায়হান বলেন, ‘হাসিব এর আগেও সোহাগ নামে আমাদের মেসের এক শিক্ষার্থীর কাছে একাধিকবার এসেছিল। তার শীতের পোশাক, দৈহিক গঠন, উচ্চতা, কণ্ঠস্বর এসব মিলিয়ে তাকে শনাক্ত করতে পেরেছি।’

জানতে চাইলে মেস মালিক সালমা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির কারণে মেসে তো মাত্র তিনজন শিক্ষার্থী আছে। এই সুযোগে এই ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তারা মুখোশ পরা ছিল বলে আমি শুনেছি। আর রায়হান নাকি একজনকে শনাক্ত করেছে। ঘটনার পরদিন পুলিশ এসেছিল। হয়তো মামলা করা হয়েছে। তবে মেস কর্তৃপক্ষ আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয় নি বলে জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। আমি বাইরে থাকায় তেমন কিছু বলতে পারছি না। তবে যতটুকু করা দরকার আমি করবো।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ও অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাসিব নামে একজনকে সন্দেহ করছেন। হাসিবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সোমবার তার পরিবার থানায় আসবে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত