শাবি প্রতিনিধি

৩০ আগস্ট, ২০১৫ ১০:১২

শাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের হামলা, ইয়াসমীন হক লাঞ্ছিত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়ার অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

রবিবার (৩০ আগস্ট) কাল আটটায় প্রশাসনিক ভবন-২(উপাচার্য ভবন) এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগের হামলায় অধ্যাপক মো. ইউনুছসহ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। লাঞ্ছিত হন অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ব ঘোষিত একাডেমিক কাউন্সিল ঠেকাতে রবিবার সকাল ৯টা থেকেই প্রশাসনিক ভবন-২(উপাচার্য ভবন) এর সামনে অবস্থান কর্মসূচী ছিল আন্দোলনকারী 'মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ' শিক্ষক পরিষদের।

অন্যদিকে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি ঠেকাতে সকাল ৭টা থেকেই একই স্থানে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। পরে সকাল সাড়ে ৭টায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপাস্থিত হলে ছাত্রলীগের সাথে বাক-বিতন্ডা হয়। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা নিজেদের সাধারণ শিক্ষার্থী বলে দাবী করলেও ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ, সহ-সভাপতি অঞ্জন রায় ও যুগ্ম সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ উপস্থিত ছিলেন।

সকাল আটটায় উপাচার্য তার কার্যালয়ে উপস্থিত হলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা এ সময় উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দিতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীরা মিছিল করে জোরপূর্বক উপাচার্যকে নিয়ে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ‘শাবিপ্রবির মাটি/ছাত্রলীগের ঘাঁটি’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের উপর হামলাও চালায়। ছিনিয়ে নেয় শিক্ষকদের ব্যানার। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্তৃক লাঞ্ছিত হন আন্দোলনকারী শিক্ষক ড. ইয়াসমীন হক, দীপনে দেবনাধ, সৈয়দ সামসুল আলম, মো. ফারুক উদ্দিন, মোস্তফা কামাল মাসুদ, মোহাম্মদ ওমর ফারুকসহ আরো কয়েকজন।

হামলায় হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন অধ্যাপক ড. মো. ইউনুছ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে শাবি ছাত্রলীগের যুগ্ন সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই উপাচার্য নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁর সুরক্ষায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা অবস্থান নিয়েছি।

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের নেতা ফারুক আহমদ বলেন, ছাত্রলীগ বর্বেরাচিতভাবে হামলা চালিয়েছে। শিক্ষকদের উপর এই হামলার ঘটনা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপাচার্য ভবনের সামনে দুই পক্ষই মুখোমুখি অবস্থান করছেন। ক্যাম্পাসে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম ও আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবিতে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করে আসছে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ' আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত