সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২০:৫৬

উপাচার্য নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগে শিক্ষার্থীদের উল্লাস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের টানা ১২ দিনের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিন পদত্যাগে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সোমবার উপাচার্য পদত্যাগ করেন।

শিক্ষার্থীরা সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে উল্লাস প্রকাশ শুরু করে। এর আগে উপাচার্যের পদত্যাগের খবর আসে ক্যাম্পাসে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে উপাচার্যের পদত্যাগ সংক্রান্ত কোন চিঠি এখনও এসে পৌঁছেনি বলে জানা গেছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের ছাত্রী ও সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফেসবুকে একটি মন্তব্য শেয়ার দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে জিনিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও তাকে বহিষ্কারের ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। আন্দোলনের মুখে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার নিতে বাধ্য হয়।

উপাচার্যের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। গত ২১ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের সমর্থকরা হামলা চালালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। পরে বিষয়টির তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গত ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর ইউজিসির তদন্ত কমিটি গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। ড. মো. আলমগীরের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যেরা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন ও লিখিত বক্তব্য নেন। তারা উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগেরও তদন্ত করেন।

রোববার তারা ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উপাচার্যকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনের সত্যতা পাওয়া গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। রোববার রাত ৯ টায় অসুস্থতার কথা বলে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বাংলো থেকে পুলিশ পাহারায় বের হয়ে যান। পরে তিনি সোমবার তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় যোগ দেন। সন্ধ্যায় প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিন ভিসি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটেক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন ২০১৫ সালের শুরুতে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। উপাচার্য পদের পাশাপাশি তিনি কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত