সুবিনয় মল্লিক

০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৮:২০

উত্তম কুমার দাশের জয়ী হওয়ার গল্প

৩৫ বিসিএস এ প্রশাসন ক্যাডারে চুড়ান্তভাবে মনোনীত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের ছাত্র উত্তম কুমার দাশ। ছাত্র-রাজনীতি করতে গিয়ে একটি পা ও হাতের একটি আঙ্গুল হারান উত্তম কুমার দাশ।

তবুও কোন শক্তিই বাধা হতে পারে নি বিসিএস'র মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায়। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে খুবই সাদামাটা চলাফেরা, পড়ালেখা অার ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি চালিয়ে আলোচনায় আসেন উত্তম। শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের গ্রুপনেতা তিনি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন উত্তম কুমার দাশের।

পারিবারিক ভাবে মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান উত্তম কুমার দাশ। ব্যক্তিগত জীবনে বেশ জনপ্রিয় একজন ছাত্রনেতা। শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে জামাত-শিবিরের হামলার শিকার হয়ে এক পা ও একটি হাতের আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয় উত্তমের। পরে দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে একটি কৃত্রিম পা সংযোজন নতুন একটি জীবনে পান অদম্য মেধাবী ছাত্র উত্তম কুমার দাশ।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে নিজ জীবনের সবকিছু হারাতে হয় এই ছাত্রলীগ নেতাকে। তারপরও থেমে থাকে নি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন। বিসিএস এ তিন তিনবার নন-ক্যাডার হয়ে এবার ৩৫তম বিসিএস এ মিলে স্বপ্নের সেই প্রশাসন ক্যাডার। অনেক কষ্ট আর সাধনার ফসল হিসেবে তার ভাগ্যের ঝুঁলিতে যুক্ত হলো বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার।

মনোবল অার অধ্যবসায় থাকলে সকল বিপদের পরও একজন মানুষকে সাফল্য এনে দিতে পারে তারই জ্বলন্ত প্রমাণ উত্তম কুমার দাশ। আমি চাই প্রতিটি ছাত্র এভাবে কঠোর অধ্যবসায় আর শ্রম বিনিয়োগ করে যাক, একদিন না একদিন সফলতা তাকে ধরা দিতে হবে।

আমাদের সমাজে এভাবে প্রতিটি ছাত্র সে যদি তার নিজের অবস্থান থেকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য কাজ করে যায় ও স্বপ্ন দেখে হলে একটি সুখি আর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন অনেকাংশে সহজ হবে।

তাই সমাজের বিত্তবানেরা গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ালে সমাজ হতে অপরাধ ও বেকার সমস্যা দূর হবে এবং তারই পাশাপাশি সমাজের মঙ্গল সাধিত হবে।

পরিশেষে বলতে চাই, আগে কর্ম তারপর ফলের আশা। যার মনে স্বপ্ন নেই, তার জীবনের কোন মূল্য নেই।

লেখক : সাবেক ছাত্রনেতা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত