আল আমিন হোসেন মৃধা

১২ জুন, ২০১৭ ০১:২৪

আইসিটির ৫৭ ধারা কন্ঠরোধকারী, মুক্তচিন্তার পরিপন্থী ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক

আইসিটি ৫৭ ধারার আইনটি ইলেকট্রনিক ফর্মে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও এর দণ্ড সম্পর্কিত একসঙ্গে অনেক বিষয় জুড়ে দেওয়া একটি আইন, যাতে সুনির্দিষ্টভাবে কোনটিকেও সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। যে কারণে আইনের এ ধারাটিকে হয়রানির বিশেষ ধারাও বলা যেতে পারে, বিশেষ করে ভিন্নমত দমনের জন্য এটা একটা পারফেক্ট টুলস।

এই আইনটি প্রথমে প্রণয়ন করে ২০০৬ সালের বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। ২০০৬ সালে এই আইন পাস হওয়ার পর থেকে এর প্রয়োগ কিংবা ব্যবহার নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ সালের এই ধারাটি ছিল অজামিনযোগ্য, কিন্তু এর সকল ধারাই ছিল অআমলযোগ্য। যার অর্থ দাঁড়ায়, পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই আইনে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না।

২০১৩ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী মহাজোট সরকার এই আইনে সংশোধনী আনে। সংশোধনীতে এই ধারাটিতে পরিবর্তন এনে কারাদণ্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি করে অন্যূন সাত বছর এবং অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ডের বিধান আনা হয়। নতুন সংশোধনীতে এই আইনটিকে অজামিনযোগ্য রেখেই এর সকল ধারা আমলযোগ্য করায় পুলিশের ওপর আর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকল না। পুলিশ চাইলেই যেকোনো সময় যে কাউকে এই ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গ্রেপ্তার করতে পারবে। সংশোধনীতে এই আইনে দোষীকে অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানা করা যাবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় কি আছে?

এতে ইলেকট্রনিক ফর্মে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ সংক্রান্ত অপরাধ ও এর দণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ
(১) কোনো ব্যক্তি যদি ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা- (ক) মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, (খ) এ বিষয়ে দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, (গ) আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, (ঘ) রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা () ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে, (চ) এ ধরণের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অন্যূন সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক কি নাঃ

সংবিধানের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে আছেঃ
১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল।
২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্র সমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে।
ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও তার ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং ক) সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা দান করা হইল।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা্য আপনি মিথ্যা বা অশ্লীল বললে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে, কিন্তু সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মিথ্যা বা অশ্লীল কোনো কিছু প্রকাশে বাধা আছে কি না? এতে সরকার নীতি বা নৈতিকতার কথা বললেও ‘মিথ্যা’ কোনো কিছু প্রকাশে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। তবে সাধারণ মানেই ধরে নেওয়া যেতে পারে, এটি উহ্য অবস্থায় হলেও আছে। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই আইনে কোথাও বলা হয়নি কোন কোন বিষয়বস্তুকে অশ্লীল বা মিথ্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে। অথচ যে কোনো ফৌজদারি আইনে অভিযোগ হতে হবে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট। এতে পরিষ্কারভাবে অভিযোগ বলা থাকতে হবে। হতে পারে, হয়তো, যদি- এ রকম কোনো কিছুর স্থান ফৌজদারি আইনে নেই।

সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও তার ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের নিশ্চয়তাদানে কয়েকটা শর্ত জুড়ে দেওয়া আছে যা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্র সমুহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে। এখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে এমন কোন কথা বলা নেই। রাষ্ট্র কোন ব্যক্তিকে ধর্ম পালনে যেমন বাধ্য করতে পারে না, তেমনি ধর্মীয় কোন সমালোচনাতেও হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সংবিধান নাগরিকের বাক ও তার ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে বাধানিষেধ না থাকলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় তা স্পষ্ট আইন করা হয়েছে।

গত ৩ জুন শনিবার ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় অবমাননার দায়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় রাঙামাটি শহরের চম্পকনগর এলাকার ছাত্রলীগকর্মী এহসান উদ্দিন ঋতু ছাত্র ইউনিয়নের শাওন বিশ্বাস ও চায়না পাটোয়ারীর নামে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় চায়না পাটোয়ারী এখন জেলে। রাঙামাটিতে এই দুজনের ফাঁসির দাবিতে হুজুরেরা মিছিলও করেছেন।

কি লিখেছিলেন ফেসবুকে শাওন বিশ্বাস ও চায়না পাটোয়ারী?
 
চায়না পাটোয়ারী লিখেছিলেন- 'ভাস্কর্য বসানোর ফলে সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা গজব দিয়েছেন। সেই গজবের ফল "মোরা"। সবাই বলো আল্লাহ আকবার।'
শাওন বিশ্বাস লিখেছিলেন- 'আল্লাহর ইশারা ছাড়া নাকি গাছের একটি পাতাও নড়ে না। তাহলে সেই প্রেক্ষিতে বলি- হুজুররা কি ধর্ষণ করেন আল্লাহর অনুমতিতে?'

এই দুটো স্ট্যাটাসের কারণে ধর্ম অবমাননা হয়ে গেছে? অথচ এই রাঙামাটিতেই গত কয়েক দিন আগে পাহাড়িদের কয়েক শ' বাড়িঘর পোড়ানো হলো, তাতে ধর্মের কিছুই হলো না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে গত বছরের ২৮ অক্টোবর রসরাজ দাসের নামে আইডি খুলে এবং তা ব্যবহার করে কাবা শরীফ নিয়ে একটি ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করা হয়। আর ওই পোষ্টকে কেন্দ্র করে নাসিরনগরের হিন্দু জেলে সম্প্রদায়ের উপর চালানো হয় হামলা, নির্যাতন, বসতভিটায় অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন,‌ ভাঙা হয় কয়েক শ' মন্দির। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে গ্রেপ্তার করা হয় রসরাজ দাসকে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায়, রসরাজ দাসের ফেসবুকে 'কাবা শরীফ এর উপর ব্যঙ্গচিত্র' পোস্টে জেলে সম্প্রদায়ের উপর চালানো হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুন্ঠন সবকিছুতেই জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আইসিটি আইনে এই মিথ্যা মামলায় রসরাজের জেল এবং নাসিরনগরের শত শত জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এর সাথে জড়িত আওয়ামী লীগের কিছুই হয়নি।

২০০১ সালে রাজাকারদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন লেখার জন্য সন্ত্রাসীদের হামলায় একটি পা হারানো একাত্তরের শহীদ পরিবারের সন্তান সাংবাদিক প্রবীর শিকদারকে ২০১৫ সালে (ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস প্রকাশ করার কারণে) ৫৭ ধারায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। ফেসবুকে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে হুমকি পাওয়ার পর নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে ঢাকার একটি থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়েছিলেন একাত্তরে শহীদের সন্তান প্রবীর শিকদার।

'আমার জীবন শংকা তথা মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী থাকবেন’ শিরোনামের ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন- 'আমি খুব স্পষ্ট করেই বলছি, নিচের ব্যক্তিবর্গ আমার জীবন শংকা তথা মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবেন: ১. এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি, ২. রাজাকার নুলা মুসা ওরফে ড. মুসা বিন শমসের, ৩. ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার ওরফে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং এই তিনজনের অনুসারী-সহযোগীরা।'

ওই লেখার মাধ্যমে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের অভিযোগ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল প্রবীর শিকদারকে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা প্রবীর শিকদারের বাবাসহ তাঁর পরিবারের ১৪ জনকে হত্যা করে। আর সেই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান প্রবীণ সাংবাদিক প্রবীর শিকদার কেন তাঁর জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে তাদের নাম উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দিলেন, সেই কারণ না খুঁজে তাকেই গ্রেপ্তার করা হল।

তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বহুল সমালোচিত ৫৭ ধারা বাকস্বাধীনতার পরিপন্থীর কথা সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা আমলা মন্ত্রী স্বীকার করলেও তথ্যমন্ত্রী তা মানতে নারাজ। চলতি বছরের ২ মে মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে সরকার বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, "অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের ক্ষেত্রে এ ধারা প্রযোজ্য হবে না। জামিন অযোগ্য ৫৭ ধারায় সাংবাদিকদের আর গ্রেপ্তার করা হবে না। নতুন ডিজিটাল আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ আইনে ৫৭ ধারার বিষয়টি পরিষ্কার করা হবে। সরকারের অবস্থানকে স্পষ্ট করতেই ৫৭ ধারা সংশোধন করা হবে। নতুন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এর অস্পষ্টতা দূর করার লক্ষ্যে শিগগিরই প্রতিমন্ত্রীসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করা হবে।"

গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন মহল আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের জোরালো দাবি জানালেও বিতর্কিত ওই ধারার পক্ষেই বারংবার সাফাই গেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিকও নয়, মুক্তচি‌ন্তা ও মানবাধিকার পরিপন্থিও নয় বলে বিভিন্ন সময় মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

অনলাইনে সরকার এবং ধর্মবিরোধী লেখা ও পোস্ট আইআইজি এর মাধ্যমে বন্ধ করা হচ্ছে, গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে টেবিলে উত্থাপিত এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ তথ্য জানান।

তারানা হালিম বলেন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিটিআরসিতে BD-CSIRT, Bangladesh Computer Security Incident Response Team গঠন করা হয়, যার মাধ্যমে ইন্টারনেটভিত্তিক অপরাধ দমনে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আসা অসংখ্য সরকার বিরোধী ও ধর্মবিরোধী কনটেন্ট আইআইজি এর মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে। ফেসবুকের বিভিন্ন আপত্তিকর পোস্ট বন্ধে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তা অপসারণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, বিষয়টি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় আইনগত, কারিগরি ও সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

৫৭ ধারায় সবচেয় বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হচ্ছে ধর্মীয় অবমাননা ও সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে। রামুর মন্দির ভাঙা হলেও বৌদ্ধদের ধর্ম অবমাননা হয় না, নাসিরনগরে শত শত হিন্দুদের মন্দির ভাঙা হলেও হিন্দুদের ধর্ম অবমাননা হয় না, ওয়াজ মাহফিলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের গালি দিলে, সব ধর্ম ভুয়া আর ইসলামই একমাত্র সঠিক ধর্ম বলে মাইকে গলা ফাটালেও অন্যান্য ধর্ম অবমাননা হয় না। ধর্ম অবমাননা হয় শুধু ইসলাম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দু'একটা স্ট্যাটাস দিলে। এক বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা পাচার, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে প্রতি বছর লুটপাট, ঘুষ-দুর্নীতি, লক্ষ লক্ষ বেকার এসব নিয়ে লিখলে কেউ সরকার বিরোধী হয়ে যায়, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

প্রকৃত গণতন্ত্রে সরকারকে জণগনের আস্থা অর্জন করতে হয়, জনগনের আলোচনা-সমালোচনা শুনতে হয়। আর আমাদের দেশে সরকারের আস্থায় জনগনকে থাকতে হবে, সরকার জণগনের সমালোচনা করবে আর আমাদের তা শুনতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ৫৭ ধারায় লাল ঘর নিশ্চিত!

 

  • লেখক : রাজনৈতিক কর্মী
  • এ বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত