মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম

০৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০

ছাত্র রাজনীতির কলুষিত রূপ: দায়ী কারা?

এমনিতেই রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। বিশেষ করে ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে প্রতিনিয়িত।

এতসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে আবার আমরা যদি ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করতে ভূমিকা পালন করি তাহলে মানুষ রাজনীতির প্রতি শুধু আস্থাই হারাবে না, রাজনীতিবিদদেরকে এমনকি আমাদের মতো রাজনৈতিক কর্মীদেরকে ধিক্কার জানাবে।

এক সপ্তাহ আগে সিলেটে অভ্যন্তরীন কোন্দলে প্রাণ হারায় ছাত্রদলের আবুল হাসনাত শিমু। একই সপ্তাহের মাথায় নিজ দলের কর্মীদের হাতে প্রাণ হারায় ছাত্রলীগ কর্মী তানিম খান। শুধু সিলেট নয়, সারাদেশেই কমবেশী এমন পরিস্থিতি বিরাজমান।

প্রশ্ন হচ্ছে এ ধরণের দুর্বৃত্তায়নের সাথে কারা জড়িত? নিশ্চয়ই সকল রাজনীতিবিদ এ ধরণের দুর্বৃত্তায়নের সাথে জড়িত নয়। তাহলে কতিপয় খল চরিত্রের লোকদের অপকর্মের বোঝা সকল রাজনীতিবিদকে বহন করতে হবে কেন? রাজনীতিবিদরা যদি নিজেদের মান সম্মান রক্ষা করতে ব্যর্থ হন কিংবা আরো সচেতনতার পরিচয় না দেন তাহলে কলুষিত রাজনীতির জন্য ভবিষ্যত প্রজন্ম বর্তমান কালের রাজনীতিবিদদেরকে দায়ী করবে। এমনকি তারা রাজনীতিতে নিরুৎসাহিত হবে। ক্লীন ইমেজের মেধাবীরাও রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে। এতে করে দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সংকট দেখা দেবে।

সুতরাং সমাজ, দেশ এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে রাজনীতি থেকে পঁচা, দূর্গন্ধযুক্ত নর্দমার আবর্জনা অপসারন করতে হবে এবং খল চরিত্রের লোকদেরকে সর্বক্ষেত্রে বয়কট করতে হবে। তবেই রাজনীতিবিদদের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভবপর হবে।

সাম্প্রতিক কালে সিলেটে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসন করতে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চার পাশাপাশি বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও  উদীয়মান তরুন নেতৃবৃন্দ এবং বিশেষ করে ছাত্র সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ নেতাদেরকে এক টেবিলে বসে উদারতা এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়া উচিত বলে মনে করি। কেননা উক্ত নেতারা কোন ভাবেই এসব বিতর্কিত কর্মকান্ডের দায় এড়াতে পারেন না। আর যদি শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীলরা সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে না পারেন তাহলে ধরে নেয়া হবে তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।

তবে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আর প্রশাসনের লোকদেরকে তাদের শপথ বাক্য পাঠের কথা স্মরণ করে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দলও পরমত সহিষ্ণুতা এবং সহনশীল আচরনের মাধ্যমে সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে - এটাই হোক আমাদের নতুন বছরের প্রত্যাশা।

লেখক: ছাত্রনেতা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত