০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ০১:৩৩
৩ নভেম্বর, কলঙ্কের জেলহত্যা দিবস আজ। বাঙালি জাতির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কজনক দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় ৪ নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে হত্যা করে ঘাতকেরা।
স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্র এদিন বঙ্গবন্ধুর আজীবনের রাজনৈতিক সহচর, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন সেই জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন (অব.) মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে জেলখানার ভেতর গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর গ্রেপ্তার করা হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ, মন্ত্রিসভার দুই সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে।
কারাগার নিরাপদ হওয়ার কথা থাকলেও ঘাতকরা ’৭৫ এর ৩ নভেম্বর ভোর রাতে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া চার সূর্যসন্তানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গুলি করে হত্যা করে। গুলিতে তাজউদ্দিনের মৃত্যু না হলে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তারা।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে থেকে এই চার নেতা ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) মনসুর আলী, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান।
জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনায় ১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর তৎকালীন কারা উপমহাপরিদর্শক কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত থেমে ছিল ২১ বছর। ১৯৯৬ সালের জুন মাসে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৯ বছর পর ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান রায় ঘোষণা করেন। বিচারিক আদালত রায়ে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (পলাতক), দফাদার মারফত আলী শাহ (পলাতক) ও এলডি (দফাদার) আবুল হাসেম মৃধাকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেন। এ ছাড়া সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদসহ ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরকে এই মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়।
আপনার মন্তব্য