গোঁসাই পাহ্লভী

১৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০২:২৫

লালকুর্তাওয়ালার গীতিকার গফুর হালী অসুস্থ, প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ

আবদুল গফুর হালী অসুস্থ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, এবার তাঁর আত্মার টানেই চট্টগ্রামে ফিরেছেন, মাউন্ট হসপিটালে আছেন।

পত্রিকায় প্রায়শই দেখি, উমুকের চিকিৎসার ভার প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন, সদ্য হেলাল হাফিজের চোখের চিকিৎসার জন্যে তিনি এগিয়ে এসেছেন, তাহলে জীবন্ত কিংবদন্তি গীতিকার ও সুরকারের ভার প্রধানমন্ত্রী নেবেন না কেন? এবং তাঁর অসুস্থতাজনিত কারণের কোনো সংবাদ আমরা মিডিয়ায় দেখছি না কেন?

বাঙলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বাঙালির চেতনার অভিনব উদ্ভাসন হিসাবে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এখানে নাগরিকতা প্রাধান্য পেয়েছে বরাবর। লোকসংগীত লোকনাটক বা লোকায়ত ঐতিহ্য কিংবা সাধনা প্রাধান্য পেয়েছে কম। ফলে, সাধু গুরুদের চুল কেটে দেওয়া, পথে ঘাটে তাঁদের অপমান করার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। কথা বলার সময় অবশ্য দেখা যায় একতারা দোতারা বাউলদের ছাড়া তাদের চলেই না।

আবদুল গফুর হালীর রচনা-সম্ভার বর্তমানকালের ক্লাসিক। তাঁর গান গেয়ে অনেকেই আজ বিখ্যাত। এই যে তাঁর গান গেয়ে যারা বিখ্যাত হলেন, তাঁরা কেহই তার অসুস্থতাজনিত কারণের হদিস জানা ও প্রচার করার দায়িত্ব কিংবা তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বের বিষয়ে সচেতন নন, এই নেমকহারামি তো বাঙালির ঐতিহ্য হয়ে পড়েছে!

দিলে বড় জ্বালারে লালকুর্তাওয়ালা’র মতো গান হালী'র সৃষ্টি। আবদুল গফুর হালীদের মাধ্যমেই লোকে আজগর আলী পণ্ডিতের মতো মহর্ষিদের নাম লোকসমাজে প্রচার হয়েছে। ৬টি আঞ্চলিক নাটকের রচয়িতা তিনি। গুলবাহার, নীলমণি, কুশল্যা পাহাড়, চাটগাঁইয়া সুন্দরী, সতী মায়মুনা , আশেকবন্ধ‘র মতো নাটকের রচয়িতা তিনি। সোনাবন্ধু তুই আমারে করলিরে দিওয়ানা, মনের বাগানে ফুটিল ফুলরে, হৃদয়ে আসন করে নেওয়া গানগুলির রচয়িতা তিনি।

পিতা আবদুস সোবহান ও মাতা গুলজার খাতুনের পুত্র আবদুর গফুর হালী’র জন্ম ১৯২৮ সালের ৬আগস্ট চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার রশিদাবাদে। গান নিয়ে গফুর হালী’র বিখ্যাত গ্রন্থ দুটি হচ্ছে,‘ তত্ত্ববিধি ও জ্ঞানজ্যোত’। ২০১০ সালে হালী’কে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র মেঠো পথের গান।

আবদুল গফুর হালী’র সুচিকিৎসা বাস্তবায়নের জন্যে প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত