সুবিনয় আচার্য্য রাজু

১৫ জুন, ২০১৭ ২০:৪১

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রাকৃতির মিলনমেলা

প্রকৃতি এবং শিক্ষা একে অপরের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। প্রকৃতির স্পর্শ, ফুলের মোহনীয় রুপ ও পাগল করা ঘ্রাণ যেখানে আছে সেখানেই শিক্ষার পুর্ণতা প্রাপ্তি হয়। আর সেই প্রকৃ্তির মোহনীয় রুপকে সাথে নিয়ে উচ্চশিক্ষা ছড়িয়ে দিতে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ নভেম্বর সিলেট নগরীর বাগবাড়িস্থ শামিমাবাদ এলাকায় নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করে সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

সবুজ বেষ্টনী আর ফুলে, ফলে গাছগাছালিও পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এই ক্যাম্পাস। এখন ক্যাম্পাসটি মুখরতি চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনের ডালপালা ছড়ানো বিশাল আকৃতির কৃষ্ণচূড়া গাছটির শাখায় শাখায় রক্তিম ফুলের সমাহার। সামনের সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে  যেকোন পথচারীর হৃদয় যেমন কাড়ে চোখজুড়ানো গাছটি তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাই পুলকিত নয়নে, অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য্য। সবুজের সমাহারের মাঝে রক্তিম ফুলের এই আভা দূর থেকে দেখলে মনে হয়, প্রখর সুর্যের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি এই কৃষ্ণচূড়া।

সকালের দিকে ক্যাম্পাসের পিচঢালা রাস্তাগুলো কৃষ্ণচূড়ার ঝরে পড়া পাপড়ি দেখে পুষ্পশয্যা মনে হয়।

প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের পর হাতের ডান দিকে নজর কাড়ে বকুল, গোলাপ, পাতাবাহার, হাসনাহেনা, জবাসহ বিভিন্ন প্রকার ফলের গাছ।
 
দ্বিতীয় ফটক এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্নারে অবস্থিত নীলকণ্ঠ, পাতা বাহার, হলুদকন্ঠ পুলকিত করে তুলে শিক্ষার্থীর হৃদয়কে।

গ্রন্থাগারের দুই দিকে অবস্থিত গাছে ফুটন্ত বর্ষা কন্যা কদম ফুল যা  দেখে মন হারিয়ে যায় কল্পনার জগতে।  সবকিছু মিলিয়ে প্রকৃতির সাথে শিক্ষার এক অপুর্ব মেলবন্ধনে পরিণত হয়েছে এস আই ইউ ক্যাম্পাস।

ক্যাম্পাসের মাঠের এক কোনে, লাইব্রেরী বিল্ডিং এর পাসে কৃষ্ণচূড়া গাছের সবুজ পাতা আর লালফুল এর মায়াবী হাতছানি অনেক কে কাছে টেনে নিয়ে যায় আর তাই ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে শিক্ষার্থীরা কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে গল্প,আড্ডা এবং সেলফি তোলায় ব্যাস্ত সময় পাড় করে আনন্দের সাথে।

এছাড়াও  শীত কালে সুর্যমুখী,গাঁধা ডালিয়া ফুল আর মৌ্মাচির গুনগুন শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের চতুর্দিক।
 
উল্লেখ্য প্রথমে গুলশান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে সরকারের নীতি অনুযায়ী বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর মাধ্যমে এর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী  বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণ, সমৃদ্ধি্‌র লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিন্দুমাত্র মুনাফা না নিয়ে নিজের অর্থ, মেধা ও শ্রম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

বর্তমানে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহযোগীতায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে হিকেপ প্রজেক্টের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে গবেষণা কার্যক্রম। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি সাহিত্য ও শিল্পচর্চায় সমান অবদান রাখছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। জাতীয় দিবসগুলো উদযাপন, শিক্ষামন্ত্রনালয় থেকে ঘোষিত সকল প্রকার কার্যক্রম বিশেষ করে জঙ্গিবাদ বিরোধী র্যা লি,সমাবেশ আয়োজনের  পাশাপাশি বাঙালীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করে পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সমানভাবে পালন করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন, আইন, ইংরেজি, সি ইএ ই, ই সি ই, ই ই ই বিভাগে বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ৩ সহস্ত্রধিক, স্থায়ী শিক্ষক ৮৫ জন, অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে সুবিশাল এক এসআইইউ পরিবার।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে ডিগ্রী অর্জন  করে শিক্ষার্থীরা চাকুরী বাজারেও নিজেদের সাফল্যের প্রমাণ দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সরকারি থেকে শুরু করে বেসরকারি এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন  শিক্ষার্থীরা। নগরায়নের যানজট, কোলাহলমুক্ত সবুজ আঙ্গিনা,প্রকৃতির আবরণে ঘেরা স্থায়ী এই মায়াবী ক্যাম্পাসটির আগামীর পথ চলা, উচ্চ শিক্ষার কার্যক্রম হয়ে ওঠবে আরো সমৃদ্ধিশালী, কাজ করবে সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এই প্রত্যাশা সবার।

লেখক : সেকশন অফিসার,  সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত