সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ০২:৪১

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, নবায়নে ফি নেওয়া শুরু

আগে জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে কোন ফি নেওয়া না হলেও মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে এ সেবার জন্যে নির্বাচন কমিশন অনুকূলে নির্ধারিত ফি দিতে হবে। নতুনভাবে এ ফি ধার্য হলেও এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোন ধরণের প্রচারণা চালানো হয়নি।

জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে, নবায়ন করতে হলে অথবা তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন হলে মঙ্গলবার থেকে নির্ধারিত হারে ফি নেওয়া হবে। এই হার ১০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির পর থেকে বিনামূল্যে এই সেবা দিয়ে আসছিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিভাগ।

প্রথমবার জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য নাগরিকদের কোনো টাকা দিতে হবে না। এ কার্ডের মেয়াদ ১৫ বছর। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের পর জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নেও ফি দিতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক না হলেও ভোটারের তথ্য যাচাইয়ে সরকারি-বেসরকারি একাধিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ইসি। ফলে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারও অঘোষিতভাবে ‘বাধ্যতামূলক’ হয়ে পড়েছে।

কোন কাজে কত টাকা: জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নের ‘ফি’ ঠিক করা হয়েছে ১০০ টাকা। তবে জরুরি ভিত্তিতে নবায়নের জন্য দিতে হবে ১৫০ টাকা। কার্ড হারিয়ে ফেললে বা নষ্ট হলে আবার পরিচয়পত্র পেতে স্বাভাবিক সময়ের জন্য প্রথমবার আবেদনে ২০০ ও জরুরি আবেদনে ৩০০ টাকা ‘ফি’ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয়বার ৩০০ টাকা (সাধারণ), ৫০০ টাকা (জরুরি) এবং পরবর্তী যে কোনোবার আবেদনে ৫০০ টাকা (সাধারণ) ও তৃতীয়বার জরুরিভাবে পেতে এক হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পরিচয়পত্র হারালে বা নষ্ট হলে বিকল্প পরিচয়পত্র সংগ্রহে ইসির নিবন্ধন অনু বিভাগে আবেদন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে নতুন ফি কমিশন সচিব বরাবর পে-অর্ডার বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। পরিচয়পত্র সংশোধনের ফি প্রথমবার ২০০, দ্বিতীয়বার ৩০০ ও পরে প্রতিবারই ৪০০ টাকা করে দিতে হবে। এ ছাড়া পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনে প্রথমবার ১০০, দ্বিতীয়বার ২০০ ও পরের যে কোনোবার ৩০০ টাকা করে দিতে হবে।

জানা যায়, নির্ধারিত ফি সোনালী ব্যাংকে ট্রেজারি চালান অথবা ইসি সচিবের অনুকূলে ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে কোড (নম্বর :১-০৬০১-০০০১-১৮৪৭) নম্বর উল্লেখ করে পরিশোধ করতে হবে।

পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাইয়ে যে কোনো সরকারি সংস্থা ও কর্তৃপক্ষকে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। প্রতিটি তথ্য প্রতিবার যাচাইয়ে খরচ করতে হবে দুই টাকা। সরকারি সংস্থা ও বিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষকে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহের ক্ষেত্রে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা ‘সার্ভিস চার্জ’ ধরা হয়েছে। প্রতিটি উপাত্ত সরবরাহে এক টাকা করে দিতে হবে। প্রতিবছর এক লাখ টাকায় এই সেবা নবায়ন করা যাবে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার থেকে ফি নিয়ে সাধারণ ও জরুরি সেবা দিতে যে প্রস্তুতি দরকার,তা ইসির নেই। নির্দিষ্ট বিভাগ বা জেলার ভোটারের জন্য কোন ডেস্ক কাজ করবে, ওয়ান স্টপ সার্ভিস থাকবে কি-না, কল সেন্টারের সুযোগ রাখা হবে কি-না এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে- এসব নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে এনআইডির প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, কোথায় কীভাবে ফি জমা দেওয়া যাবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। গণমাধ্যমেও তা প্রচার করা হবে।

তিনি বলেন, ১ সেপ্টেম্বরের আগে যারা সেবা পেতে আবেদন করেছেন,তাদের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। মানুষকে সচেতন করার জন্য এই ফি ধার্য করা হয়েছে।

দেশে বর্তমানে নয় কোটি ৬২ লাখ ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে সব মিলিয়ে সরকারের খরচ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকার মতো। আর এই কার্ড নবায়ন থেকে আয় হবে হাজার কোটি টাকা। প্রতিদিন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, পরিবর্তন ও হারানোর বিষয়ে গড়ে প্রায় এক হাজার ১০০ নতুন আবেদন পড়ে।

বর্তমানে যে লেমিনেটিং করা ম্যানুয়াল কার্ড দেওয়া হয়েছে, তার মেয়াদ ১৫ বছর। তবে আগামীতে যে স্মার্টকার্ড দেওয়া হবে,তার মেয়াদ হবে ১০ বছর। ফলে আগামী ১০ বছর পর এই কার্ড নবায়ন করতে হবে সবাইকে। বর্তমানে দেশের নয় কোটি ৬২ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে ইসির তথ্যভাণ্ডারে। এ ছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত