আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ জুলাই, ২০২২ ১১:৪০

ইউরোপে রেকর্ড তাপমাত্রা, বিধ্বস্ত জনজীবন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রেকর্ড তাপমাত্রায় জনজীবন রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক দেশেই দাবানলে পুড়ছে হাজার হাজার হেক্টর জমি। গরমজনিত কারণে মৃত্যুও বাড়ছে। শুধু পর্তুগালেই ১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) সতর্ক করে বলেছে, সামনে আরও খারাপ পরিস্থিতি আসতে পারে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তাপমাত্রা রেকর্ড ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটিতে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। জার্মানিও গতকাল মঙ্গলবার তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গরম দিন অতিবাহিত করেছে। গত সোমবার ফ্রান্সের ৬৪টি জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এছাড়া বেলজিয়ামে তীব্র তাপদাহে পুড়ে গেছে একটি রিসোর্টের কিছু অংশ। নেদারল্যান্ডসে গতকাল মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। পর্তুগালেও তাপমাত্রা বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্তুগালের তাপমাত্রা ছিল রেকর্ড ৪৭ ডিগ্রি। গত সোমবার স্পেনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপদাহে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, গ্রিস, স্পেনসহ বেশ কয়েকটি দেশে। ফ্রান্সে দাবানলে ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি পুড়েছে। এরই মধ্যে ৩৪ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়ার এমন বিরূপ পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে দায়ী করেছেন আবহাওয়াবিদেরা।

উল্লেখ্য, ১৯ শতকের শিল্পবিপ্লবের পর ভারী কলকারখানা হু হু করে বেড়েছে। এর পর থেকে বৈশ্বিক উষ্ণতা ইতিমধ্যে এক দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। চলতি শতাব্দীতে তা এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রিতে ধরে রাখা না গেলে পৃথিবীর অনেক নিচু দেশ বা অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন অংশে সম্প্রতি তাপপ্রবাহ, দাবদাহ, বন্যা, অতিবৃষ্টি, খরার মতো যেসব দুর্যোগ চলছে, তার জন্য অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ মোটাদাগে দায়ী।

তবে গত চার দশকে ইউরোপে তাপপ্রবাহ, দাবদাহ, অতিবৃষ্টিসহ নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়েছে, যার জন্য অতিরিক্ত কার্বন ও গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণের বাইরে অন্য কারণ রয়েছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরি গবেষণা কেন্দ্রের এক প্রতিবেদন বলা হয়, ইউরোপের চলতি দাবদাহের জন্য নদী ও সাগর থেকে পশ্চিমা বাতাসের প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন, আর্টিকের তাপমাত্রার দ্রুত বৃদ্ধি ও আটলান্টিকের স্রোতোধারা বদলে যাওয়া অন্যতম প্রধান কারণ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত