আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৫ জুলাই, ২০২২ ১১:৪২

শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের আবেদন

শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে ভূমিকার জন্য দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের গ্রেপ্তার চেয়ে সিঙ্গাপুরের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (আইটিজেপি) নামের একটি সংস্থা।

স্থানীয় সময় শনিবার এ অভিযোগ করে শ্রীলঙ্কায় মানবাধিকার নিশ্চিতে কাজ করা সাউথ আফ্রিকাভিত্তিক সংস্থাটি।

জাতিগত সংখ্যালঘু তামিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে ২৫ বছর গৃহযুদ্ধে লিপ্ত ছিল সিংহলি জাতীয়তাবাদী শ্রীলঙ্কা সরকার। ২০০৯ সালে লঙ্কান বাহিনীর হাতে বিদ্রোহীদের নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ সপরিবারে নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান হয়। ওই যুদ্ধে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, গৃহযুদ্ধের শেষ সময়ে এসে গোতাবায়া রাজাপাকসে যুদ্ধে করণীয়-বর্জনীয় সংক্রান্ত জেনেভা কনভেনশনের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছেন বলে ৬৩ পৃষ্ঠার অভিযোগে তুলে ধরেছে আইটিজেপি।

সংস্থাটির ভাষ্য, সর্বজনীন এখতিয়ারের ভিত্তিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে সিঙ্গাপুর।

শ্রীলঙ্কায় গত কয়েক মাস ধরে টানা বিক্ষোভের পর পালিয়ে মালদ্বীপ হয়ে সিঙ্গাপুরে যান ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া রাজাপাকসে। ১৩ জুলাই দেশটিতে পৌঁছার পরের দিন তিনি ই-মেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান, যা পরে গ্রহণ করা হয়।

গোতাবায়াকে গ্রেপ্তারে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি রোববার আল জাজিরাকে নিশ্চিত করেন আইটিজেপির নির্বাহী পরিচালক ইয়াসমিন সুকা। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তি আছে। আইনি অভিযোগে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধের সময় জেনেভা কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও অপরাধ আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন করেছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে।

‘এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, নির্যাতন এবং অমানবিক আচরণ, ধর্ষণ এবং অন্যান্য যৌন সহিংসতা, স্বাধীনতা খর্ব করা, মারাত্মক দৈহিক ও মানসিক ক্ষতি এবং অভুক্ত রাখা।’

শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার চার বছর আগে ২০০৫ সালে গোতাবায়াকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন সহোদর ও তৎকালীন নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে। তামিল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বিষয়টি দেখভাল করতেন গোতাবায়া।

সে প্রসঙ্গে আইটিজেপির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ এবং ত্রাণ সংস্থাগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধকবলিত অঞ্চল থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন গোতাবায়া, যাতে করে (তামিল) বেসামরিক লোকজনের ওপর চালানো লঙ্কান সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের কোনো সাক্ষী না থাকে। অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জমা দেয়া আমাদের আবেদনে গোতাবায়াকে গ্রেপ্তার, ঘটনার তদন্ত এবং তাকে অভিযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এটাই আমাদের অভিযোগের ভিত্তি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত