সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ জুলাই, ২০২৩ ১৬:৩২

চাঁদের পথে ভারতের মহাকাশযান

ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাস গড়তে চাঁদের পথে ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ যাত্রা শুরু করেছে। এই অভিযান সফল হলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি রোবটযান নামাতে সক্ষম হবে। চাঁদের ওই অংশ এখনও খুব কমই জানে মানুষ।

চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে মহাকাশযানের মিশন প্রথম হলেও এটা বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারতের চন্দ্র-যাত্রা।

শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে এ মহাকাশযানের সফল উৎক্ষেপণ হয়।

ঐতিহাসিক এ মুহূর্তের সাক্ষী হতে ভারতের শতকোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশন আর সোশাল মিডিয়ায়। আগ্রহ নিয়ে নজর রেখেছে বিশ্বের অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ও বিজ্ঞানীরাও।

ভারতের তৃতীয় চন্দ্রাভিযানের এই মহাকাশযান তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার- এই তিনটি অংশ নিয়ে।

বিবিসি লিখেছে, চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার আগামী ২৩ বা ২৪ আগস্ট চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীরা।

এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।

ইসরোর এই চন্দ্রযাত্রার কেন্দ্রে রয়েছে এলভিএম-৩ রকেট। যা চন্দ্রযানটিকে শক্তি জোগাবে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ঠেলে দেবে। এলভিএম-৩ হল একটি ত্রিস্তরীয় উৎক্ষেপণ যান। এর আগে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ এবং চন্দ্রযাত্রায় এই এলভিএম-৩ ব্যবহৃত হয়েছে। একে ভারতীয় রকেটের ‘বাহুবলী’ বলা হয়। এর মধ্যে দুটি স্তরে কঠিন জ্বালানি এবং একটি স্তরে তরল জ্বালানি রয়েছে। কঠিন জ্বালানি ১২৭ সেকেন্ড ধরে জ্বলে। উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ডের মধ্যে জ্বলতে শুরু করে তরল জ্বালানি। তা ২০৩ সেকেন্ড ধরে রকেটটি চালনা করে। এটার দৈর্ঘ্য ৪৩ দশমিক ৫ মিটার। যা প্রায় দিল্লির কুতুব মিনারের উচ্চতার অর্ধেক।

এর আগে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ইসরোর পাঠানো ‘চন্দ্রযান-২’ চাঁদে অবতরণে ব্যর্থ হয়। চাঁদে ভারত থেকে প্রথম মিশনে যায় ‘চন্দ্রযান-১।’ সেটি ছিল ২০০৮ সালে। চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার পরে চন্দ্রপৃষ্ঠে মহাকাশযানটিকে ক্র্যাশ-ল্যান্ড করানো হয়।

ইসরো বলছে, চন্দ্রযান-২-এর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে চাঁদের মাটি ছোঁয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অতীতের অভিযানে পাঠানো অরবিটরটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। তাই এবারের অভিযানে ইসরো চাঁদের কক্ষপথে আর কোনো অরবিটার পাঠাবে না। চাঁদের মাটিতে নামতে কক্ষপথে থাকা চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারেরই সাহায্য নেবে। এবার চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যাওয়া ল্যান্ডার আর তার ভিতরে থাকা রোভার। চাঁদের মাটিতে নেমে দুসপ্তাহ ইসরোর গবেষণা চলবে। এতে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং নাসার সাহায্যও নেয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত