সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ আগস্ট, ২০২৩ ২০:৩২

পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৫ জন নিহত, আহত অন্তত ৪০

পাকিস্তানের নবাবশাহ শহরে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।

রোববার (৬ আগস্ট) সরহরি রেলস্টেশনের কাছে হাজারা এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। করাচি থেকে রাওয়ালপিন্ডি যাওয়ার পথে ট্রেনটি ওই এলাকায় দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। উদ্ধারকারী দল ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

পাকিস্তানের সরকারি টেলিভিশন পিটিভি জানিয়েছে, সেনাবাহিনী ও রেঞ্জার্স দুর্ঘটনাস্থলে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। হায়দ্রাবাদ ও স্কারুন্ড থেকে অতিরিক্ত সেনা ডাকা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।

লাহোরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় রেল ও বিমান চলাচল সংক্রান্ত ফেডারেলমন্ত্রী খাজা সাদ রফিক বলেন, দুর্ঘটনার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য বলছে, ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকেজন।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ট্রেনটির গতি বেশি ছিল না। দুর্ঘটনার পর কর্মকর্তরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন। শুককুর ও নবাবশাহ হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুর্ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা দেখা হবে।

পাকিস্তান রেলওয়ের শুক্কুর ডিভিশনাল কমার্শিয়াল অফিসার (ডিসিও) মহসিন সিয়াল জানান, সরহরি রেল স্টেশনের আউটার সিগন্যালের ওই দুর্ঘটনায় ঠিক কতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার হওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। কেউ বলছে পাঁচটি, কেউ বলছে আটটি আবার কেউ বলছে ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।‘

টেলিভিশনে প্রচারিত দুর্ঘটনার ফুটেজে দেখা যায়, লাইনচ্যুত বগিগুলোর পাশে অনেক যাত্রী ভিড় করছেন। শহীদ বেনজিরাবাদ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মুহাম্মদ ইউনিস চান্দিও এটিকে ‘বড় দুর্ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন। যদিও হতাহতের সংখ্যা জানাতে রাজি হননি।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে নবাবশাহর কমিশনার আব্বাস বেলুচ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেন সরিয়ে ট্র্যাক স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করেছে রেলওয়ের একটি ট্রেন। হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

প্রাদেশিক রেলওয়ে কর্মকর্তা ইজাজ শাহ বলেন, বেশ কয়েকজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। সহায়তার জন্য একটি ট্রেন পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, কয়েক ডজন মানুষ দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে রয়েছেন। দুমড়ে যাওয়া বগি থেকে মানুষকে বের করে আনতে কেউ কেউ জানালার কাঁচ ভাঙছেন এবং অন্তত একটি বগি উল্টে রয়েছে।

পাকিস্তানের পুরানো রেলওয়ে ব্যবস্থার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ও বগি লাইনচ্যুত ঘটে। ২০২১ সালের জুনে সিন্ধু প্রদেশের কাছে ডাহাকারি অঞ্চলে দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে অন্তত ৬৫ জন নিহত হয় এবং আহত হয় আরও ১৫০ জন। ওই দুর্ঘটনায় একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে বিপরীত ট্র্যাকের ওপর উঠে যায় এবং দ্বিতীয় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন মিনিটখানেক পরেই ধাক্কা দিয়ে বসে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তেজগ্রাম এক্সপ্রেসে থাকা ৭৫ জন যাত্রী আগুনে পুড়ে মারা যায়। এ ছাড়া দেশটির ঘোটকি শহরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২০০৫ সালে একশ’রও বেশি মানুষ মারা যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত