সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ মার্চ, ২০২৪ ২১:৪০

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশজুড়ে সমালোচিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। দেশটির সংসদে এ বিষয়ক একটি বিল পাস হওয়ার চার বছর পর তা কার্যকর করা হচ্ছে।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সিএএ কার্যকর করার কথা জানায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাস করে নরেন্দ্র মোদি সরকার।

ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় চান, তাহলে তা দেবে ভারত। তবে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যারা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, কেবল তারাই পাবেন এ সুবিধা।

আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়, আইনে পরিণত হলেও প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে সিএএ আইনে ধারা-উপধারা যুক্ত হয়নি। ফলে বাস্তবে এ আইন কার্যকরও হয়নি।

ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির সাক্ষরের ছয় মাসের মধ্যে আইনের নির্দিষ্ট ধারা-উপধারা যুক্ত করতে হয়। অন্যথায় লোকসভা কিংবা রাজ্যসভার নির্দিষ্ট কিছু কমিটির কাছ থেকে আইনটি পাস করতে বিশেষ অনুমতি নিতে হয়।

সে সময় সংসদের দুই কক্ষেই পাস হওয়ার পর ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও সিএএ বিলে অনুমোদন দিয়েছিলেন। আইনটি কার্যকর করতে ২০২০ সাল থেকে সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে বিজেপি সরকারকে কটাক্ষও করছিল বিরোধী দলগুলো।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশটিতে সিএএ কার্যকর হবে। শুধু তা-ই নয়, শিগগিরই এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি কথা জানান তিনি।

তবে সম্প্রতি মতুয়া অধ্যুষিত নদীয়া এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার সভায় এসে সিএএ নিয়ে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অবশ্য বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন, ‘ভোটের আগেই সিএএ কার্যকর হচ্ছে। ভোট ঘোষণার এক-দুদিন আগে হলেও এটি কার্যকর হবে।’

এর আগে পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সিএএ-এর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াই অনলাইনে হবে। সেখানে আবেদনকারীদের শুধু জানাতে হবে তারা কবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।’

সিএএ কার্যকর করা নিয়ে দীর্ঘ দিন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যেই টালবাহানা চলছিল। করোনা মহামারীর আগে থেকেই ভারতের নানা প্রান্তে সিএএ বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দোলনে ভারতজুড়ে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান।

বিজেপি সরকারের বিরোধী দলগুলোই প্রধানত এ আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মতো বিরোধী দলশাসিত রাজ্যগুলো ‘ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে’ এ আইন কার্যকরের ঘোর বিরোধী।

এখন পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি ভারতের নির্বাচন কমিশন। তার আগেই সিএএ কার্যকর করল দেশটির সরকার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত