ডেস্ক রিপোর্ট

১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ২১:৫১

আলোচিত-সমালোচিত মমতা ঢাকায়

ঢাকায় অবস্থানকালে মমতা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সংগ্রহশালা এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাথে বৈঠক করবেন। বসবেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের সঙ্গেও। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা বৈঠকের কথা রয়েছে।

রাত সোয়া নয়টার সময় পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকায় নেমে বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন- মনে হচ্ছে নিজের দেশেই এসেছি।

এসময় তিনি বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। এয়ার ইন্ডিয়ার নিয়মিত ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান মমতা।

আগে থেকে অপেক্ষমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ-১ এ তাকে স্বাগত জানান। পররাষ্ট দপ্তর ও ভারতীয় হাই কমিশনের ঊধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২ দিন আগেই সফরের বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

এর আগে কোলকাতা বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার আগে মমতা সাংবাদিকদের জানান, দুই বাংলার মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতেই ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি। মমতার ঢাকা সফরকে স্বাগত জানিয়ে ফোনে তাকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।

মমতার সঙ্গে আছেন দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও ব্রাত্য বসু, দুই সেলিব্রেট সংসদ সদস্য মুনমুন সেন ও দীপক অধিকারী দেব, অভিনেতা অরিন্দম শীল, দুই গায়ক ইন্দ্রনীল সেন ও নচিকেতা, চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ এবং দুই বাংলার সুপারস্টার প্রসেনজিৎ।

ঢাকায় অবস্থানকালে মমতা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি সংগ্রহশালা এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাথে বৈঠক করবেন। বসবেন বাংলাদেশের সুশীল সমাজের সঙ্গেও। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা বৈঠকের কথা রয়েছে।

বহু প্রতীক্ষিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হওয়ার জন্য মমতা কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে আলোচিত চরিত্র।

দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভর করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুথ্যমন্ত্রী মমতার আপত্তিতেই নয়া দিল্লি চার বছর আগে আটকে গিয়েছিল তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি।

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে সফরে আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে নিজেকে সরিয়ে নেন তিস্তা চুক্তির বিরোধী মমতা। পরে আর ওই চুক্তি হয়নি।

তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের পাশাপাশি স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকরেরও বিরোধিতা ছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর, যা এখন ভারতের পার্লামেন্টে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি বিষয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ইতোমধ্যে দেখিয়েছেন ভারতের নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় তিস্তা এবং সীমান্ত চুক্তির বিষয়ে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়।

দুই দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে সই হওয়া সীমান্ত চুক্তি এবং এর আওতায় ২০১১ সালের প্রটোকল বাস্তবায়নে ভারতীয় পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনী বিল আনার চেষ্টায় বাদ সাধেন মমতা।

তবে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর নিষ্পত্তির ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠলে মমতারও সুর নরম হতে থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ে নিজের অনাপত্তির কথাও জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।

 

 

 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত