সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১১ জুন, ২০১৬ ১৬:৩৯

ঘানায় নিষিদ্ধ হলো রঙ ফর্সাকারী প্রসাধন

ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি-র মতো রঙ ফর্সাকারী ক্রিম বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়৷ এ ধরনের প্রসাধন দ্রব্যে যে হাইড্রোকুইনোন থাকে, তা ক্যানসারের কারণ হতে পারে৷ তাই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মতো ঘানাও এবার তা নিষিদ্ধ করল৷

ঔপনিবেশিকতার আমল থেকেই শ্বেতাঙ্গরা প্রভু, কৃষ্ণাঙ্গরা কর্মচারী, করণিক, ভৃত্য বা দাস৷ ঔপনিবেশিকতার অন্ত ঘটলেও সেই সাদা চামড়ার ভূত মানুষজনের ঘাড় থেকে নামেনি৷ তবে সাদা চামড়ার লোভ সাহেবরা আসার অনেক আগে থেকেই ছিল, অন্তত ভারতের মতো দেশে, যেখানে উঁচুজাতের মানুষ চেনা যেতো তার গায়ের রং দেখে৷ সব মিলিয়ে এই সাদা-কালোর বর্ণপ্রথা কবে না জানি বিয়ের বাজারে ঢুকে গেছে৷ গোড়ায় ‘উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ', ‘রংটা একটু চাপা', এই সব বলে কাজ চালানো গিয়েছিল৷ পরে এলো ‘স্কিন লাইটেনিং প্রোডাক্টদের' বাজার৷ তার আগেই আবার সিনেমা আর বিজ্ঞাপনের জগতে প্রায় ডারউইনের ন্যাচারাল সিলেকশনের মতো যাদের গায়ের রং একটু বেশি সাদা, তারাই জায়গা করে নিয়েছেন৷ পাত্ররা যেমন ফর্সা পাত্রী খোঁজে, তেমনভাবে গোটা সমাজেই সৌন্দর্য ও সাফল্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে – সাদা চামড়া৷

পশ্চিমে জাতিবাদের চেহারা একরকম, উপমহাদেশে একরকম, আবার আফ্রিকায় একরকম৷ ঘানায় স্কিন ব্লিচিং করার প্রসাধন দ্রব্য ব্যবহার করে থাকেন মাত্র ৩০ শতাংশ মহিলা৷ সে তুলনায় নাইজেরিয়ায় ক্রিম মেখে ফর্সা হবার চেষ্টা করেন শতকরা ৭৭ ভাগ ও সেনেগালে শতকরা ৫২ থেকে ৬৭ ভাগ মহিলা (ডেজ্ড অ্যান্ড কনফিউজ্ড পত্রিকার পরিসংখ্যান)৷

আফ্রিকার এক দরিদ্র দেশ ঘানার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অথরিটি এবার ঘোষণা করে দিয়েছে যে, ২০১৬ সালের আগস্ট মাস থেকে ঘানায় হাইড্রোকুইনোন যুক্ত কোনো ধরনের প্রসাধন বিক্রয় করা নিষেধ৷ মাত্র ১০ বছর আগে পদার্থটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হয়। পদার্থটি ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় নিষিদ্ধ৷ এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো ঘানা, একটি কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত দেশ৷

আপনার মন্তব্য

আলোচিত