সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২৬ জুন, ২০১৬ ০৯:৩৪

ইইউতে থাকতে যুক্তরাজ্য থেকেই আলাদা হতে চায় লন্ডনবাসীরা!

ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে যুক্তরাজ্যে ৫২% ভোট পড়লেও  ইংল্যান্ডের রাজধানী শহর লন্ডনের অবস্থা এর বিপরীত। লন্ডনের অদিবাসীদের ৬০% ইইউতে থাকতে চেয়েই ভোট প্রয়োগ করেছিল।

তবে সামগ্রিক ফলে অল্প ব্যবধানে ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় আসায় তা কোনভাবেই মানতে পারছেন না লন্ডনবাসীরা। গণভোটের ফলাফল ঘোষণার পরদিনই যুক্তরাজ্য থেকেই বিচ্ছিন্ন হওয়ার দাবি উঠেছে লন্ডনে। মেয়র সাদিক খানের কাছে জমা পড়েছে ১ লাখ মানুষের স্বাক্ষরিত এই দাবি।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের বরাবর এই পিটিশন দাখিল করেছে ভোটাররা। মেয়রকে তারা অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন লন্ডনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে ইইউতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।


গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লেবার পার্টির হয়ে মেয়র নির্বাচিত সাদিক খান নিজে ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচারে ছিলেন। ভোটের ফল প্রকাশের পর শুক্রবার সকালে লন্ডনের ৮ হাজারের বেশি নাগরিক তার কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন, যাতে ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে তাকে ব্যতিক্রমী ওই উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। আবেদনের উদ্যোক্তা জেমস ও মেলে লেখেন, লন্ডন একটি আন্তর্জাতিক শহর। আমরা ইউরোপের প্রাণ হিসেবে থাকতে চাই।

এজন্য মেয়র সাদিক খানকে লন্ডনের স্বাধীনতা ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, মেয়র সাদিক, আপনি কি প্রেসিডেন্ট সাদিক হওয়াটাই বেছে নেবেন না? এটাকে সত্যি করুন…!

অবশ্য ভোটের ফল প্রকাশের পরই আসন্ন বিপর্যয়ের সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। পাউন্ডের দাম পড়ে গেছে ১০ শতাংশ যা গত ৩২ বছরে দেখেনি ব্রিটিশরা।

জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে দ্বিতীয়বার গণভোট আয়োজনের দাবি জোরদার হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১০ লক্ষাধিক লোকের আবেদন পড়েছে।

তাছাড়া ফলাফল ঘোষণার আট ঘণ্টা পর গুগলের প্রশ্নোত্তর খোঁজার প্রবণতা দেখে বুঝা যাচ্ছে, অনেক ব্রিটিশ ‘ইইউ কী’ এবং এই জোট থেকে বেরিয়ে গেলে লাভ-ক্ষতিই বা কী হতে পারে তা না বুঝেই ‘লিভ’ এর পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। এখন তারা আফসোস করছেন। এবং বলছেন, দ্বিতীয়বার ভোট দেয়ার সুযোগ থাকলে অবশ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পক্ষেই ভোট দিবেন তিনি।

এদিকে লন্ডনবাসীদের মত একই অবস্থা স্কটল্যান্ডে। স্কটল্যান্ডের ৬৪% মানুষ ইইউ থেকে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। পুরো ব্রিটেনের ফল তারাও মানতে পারছেন না। ফের গণভোট দিয়ে ব্রিটেন থেকে আলাদা হয়ে ইইউতে যোগ দিতে চাইছেন তারা।

অনেকদিন থেকেই স্বাধীন রাষ্ট্র হবার জন্য আলোচনা চলছে সেখানে। যদিও ২০১৪ সালের গণভোটে যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিপক্ষে বেশিরভাগ স্কটিশ রায় দেন। তবে ব্রেক্সিটের ফলের পর
পাল্টে গেছে পরিস্থিতি জানিয়েছেন খোদ ফার্স্ট মিনিস্টার। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিতীয়বারের মত গণভোট এখন সময়ের দাবি মনে করছেন বিশ্লেষকরাও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত