জুয়েল রাজ, যুক্তরাজ্য

২৯ মার্চ, ২০১৭ ২১:১৪

আনুষ্ঠানিক ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করল ব্রিটেন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে স্বাক্ষরিত চিঠি বুধবার ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক-এর হাতে তুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করল ব্রিটেন।

২০০৯ সালের ১ ডিসেম্বর কার্যকর হওয়া লিসবন চুক্তি ইইউর অন্যতম সাংবিধানিক ভিত্তি। লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটির আওতায় সই করা এ চিঠি দিয়েই মে ইইউ কে জানিয়ে দিয়েছেন, তার দেশ আর ২৮ সদস্যের এই পরিবারে থাকছে না। যুক্তরাজ্যই প্রথম দেশ যারা ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে আসছে।

ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বুধবার ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক-এর হাতে একটি চিঠি তুলে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ৫০ অনুসারে তার হাতে ৬ পৃষ্ঠার চিঠিটি তুলে দেওয়া হয়। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এ চিঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডোনাল্ড টাস্ক। থেরেসা মে স্বাক্ষরিত চিঠিটি তার হাতে হস্তান্তর করেন, ইইউ-তে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত টিম বারো।

চিঠিটি হাতে পেয়ে বিচ্ছেদ বেদনার সুরে টাস্ক বলেন, “আমরা এখনই আপনাদেরকে মিস করতে শুরু করেছি। আজ খুশীর কোনও দিন নয়। খুশী খুশী ভাব করারও কোনও কারণ নেই। না ব্রাসেলসে, না লন্ডনে। কারণ, সর্বপোরি ব্রিটিশ ভোটারদের প্রায় অর্ধেকসহ বেশির ভাগ ইউরোপীয়ই আলাদা হয়ে যাওয়া নয় বরং একসঙ্গে থাকারই ইচ্ছা পোষণ করে।”

এই চিঠি হস্তান্তরের পর যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে আর কোনও বাধা থাকলো না। বুধবার দুপুরে থেরেসা মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমপিদের উদ্দেশ্যে বিবৃতিতে, ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিদায়ের সময় গণনা শুরুর এ মুহূর্তকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, “আর পেছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। ব্রিটেন ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।”

ব্রেক্সিট আলোচনার সময় মে যুক্তরাজ্যের প্রতিটি মানুষেরই প্রতিনিধিত্ব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এদের মধ্যে আছে ব্রিটেনে বসবাসরত ইইউ নাগরিকরাও। ব্রেক্সিটের পর যাদের ভাগ্যে কী হবে সেটি এখনও অনিশ্চিত। কিন্তু দেশের প্রতিটি মানুষের জন্যই সঠিক একটি চুক্তি করতে মে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে তার দল সম্মান করে। তবে সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপের প্রতি তারা নজর রাখবে।

আর্টিকেল ফিফটি অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জোট ছাড়ার ইচ্ছা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার পর বিচ্ছেদের দর কষাকষি শেষ করতে দুই বছর সময় পাওয়া যাবে। ওই সময়ে জোটের বাকি ২৭ দেশ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আলোচনায় বসবে।

২০১৬ সালের জুনে এক গণভোটে ব্রিটেনের ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় ব্রিটিশ নাগরিকরা। আর্টিকেল ৫০ দুই পক্ষকেই একটি চুক্তিতে পৌছানোর জন্য দুই বছর সময় দেবে। যদি দুই পক্ষই আলোচনার মেয়াদ বাড়াতে সম্মত না হয়, তবে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত