সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ মার্চ, ২০১৮ ২৩:২৫

৬৩ বছরে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ৭০টির অধিক দুর্ঘটনা

১৯৫৫ সালে উদ্বোধনের পর থেকেই দুর্ঘটনায় জর্জরিত নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এখন পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে এই বিমানবন্দরে। এতে এখন পর্যন্ত ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানায় বিবিসি।

সোমবার (১২ মার্চ) দুপুরে ইউএস-বাংলার বিএস-২১১ ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হবার পর ফের নজরে আসে নেপালের বিমান চলাচলের নিরাপত্তার দুর্বলতা। বিশ্লেষকরা বলছেন, নেপালে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে তাদের সমালোচনা হয়েছে।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটিতে প্রথম দুর্ঘটনার ঘটে ১৯৭২ সালের মে মাসে। থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমান অবতরণ করার সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। তাতে ১০০ জনের মতো যাত্রী ও ১০ জন ক্রু ছিল। তাদের একজন নিহত হয়েছে।

এছাড়াও, ১৯৯২ সালে থাই এয়ারওয়েজের একটি এয়ারবাস অবতরণ করার জন্যে বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হবার সময় একটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়। এতে ১১৩ জন যাত্রীর সকলেই নিহত হয়।

একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ঘটে আরো একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা। পিআইএর বিমানটি বিধ্বস্ত হলে বিমানের ভেতরে থাকা ১৬৭ জনের সবাই প্রাণ হারায়।

১৯৯৫ সালে রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বেষ্টনী ভেঙে মাঠের ভেতরে ঢুকে যায়। তাতে দু'জন নিহত হয়।

১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে নেকন এয়ারের একটি বিমান ত্রিভুবন বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় একটি টাওয়ারের সাথে সংঘর্ষে কাঠমান্ডু থেকে ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে একটি অরণ্যে বিধ্বস্ত হয়। এতে ১০ জন যাত্রী ও ৫ জন ক্রুর সবাই নিহত হন।

একই বছর ডিসেম্বরে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৮১৪ কাঠমান্ডু থেকে দিল্লী যাওয়ার পথে ছিনতাই হয়। বিমানটিকে পরে আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে নিয়ে যাওয়া হয়।

২০০৮ সালে নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান উড্ডয়নের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে।

২০১০ সালের অগাস্টে অগ্নি এয়ারক্রাফটের একটি ফ্লাইট ভারি বর্ষণের কবলে পরে কাঠমন্ডু থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩ জন ত্রু এবং ১১ জন যাত্রী নিহত হন।  

২০১১ সালে বুদ্ধ এয়ারের একটি বিমান বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় ১৯ জন আরোহীর মধ্যে একজন শুরুতে প্রাণে বাঁচতে সক্ষম হলেও পরে হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় মারা যান। বলা হয় খারাপ আবহাওয়া ও নিচুতে থাকা মেঘের কারণে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। এতে ১৬ জন যাত্রী এবং ৩ জন ক্রু নিহত হন।

২০১২ সালে সীতা এয়ারের একটি বিমান উড্ডয়নের পরপরই সম্ভবত একটি শকুনের সাথে ধাক্কা খাওয়ার পর বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৬ জন যাত্রী এবং ৩ জন ক্রু সবাই মারা যান।

২০১৫ সালে তুর্কী এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ঘন কুয়াশার মধ্যে নামতে গিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়ে। ৩০ মিনিট ধরে এটি বিমানবন্দরের উপর উড়তে থাকে। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় নামতে পারলেও সেটি রানওয়ের থেকে ছিটকে মাঠের ঘাসের উপর চলে যায়। ২২৭ জন যাত্রী ও ১১ জন ক্রুকে সেখান থেকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

২০১৭ সালের মে মাসে সামিট এয়ারলাইন্সের একটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হলে বিমানের ক্যাপ্টেন ও প্রধান কর্মকর্তা নিহত হন।

এবং সর্বশেষ দুর্ঘটনার শিকার হলো ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানটি। যাতে এখন পর্যন্ত অর্ধশত মানুষের নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত