সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ০০:২৪

ব্যাংকক হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশে!

থাইল্যান্ড পুলিশ ধারণা করছে ব্যাংককে মন্দিরের কাছে প্রাণঘাতী বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশে ঢুকেছে। তবে বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি (ইন্টারপোল ডেস্ক) বলছে এ বিষয়ে থাইল্যান্ডের কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং ইন্টারপোলের পক্ষ থেকেও কোনো তথ্য তারা পায়নি।

বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার আগের দিন মূল পরিকল্পনাকারী চীনের পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন বলে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার একজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে থাই পুলিশের ধারণা।

মানব পাচারকারীরা গত ১৭ আগস্ট এ হামলা চালায় বলে সন্দেহ থাইল্যান্ড পুলিশের।

হিন্দুদের একটি মন্দিরে বোমা হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হন। হামলায় জড়িত সন্দেহে দুই বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এক ব্যক্তিকে বিস্ফোরকসহ ব্যাকপ্যাক দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এবং ওই ব্যক্তিই হামলাটি চালিয়েছিলেন বলে থাই পুলিশ নিশ্চিত।

‘ইজান’ নামের এক ব্যক্তি হামলা পরিকল্পনায় মূল ভূমিকা পালন করেন এবং ব্যাংককে এক বৈঠকে তিনি অন্যদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন বলে গ্রেপ্তার ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, বলেছে রয়টার্স।

সন্দেহভাজন হামলার মূল পরিকল্পনাকারী সম্পর্কে থাই পুলিশের উপ-প্রধান চাকথিপ চাইজিনদা রয়টার্সকে বলেন, “ওই ব্যক্তির নাম ইজান। তবে আমি জানি না, এটা তার আসল নাম কি না। সে এই চক্রের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন।

“আমি জানি না, সে কোন দেশের নাগরিক। এখন শুধু বলতে পারি, হামলার জন্য যাদের খুব গুরুত্ব দিয়ে খোঁজা হচ্ছে, ইজান তাদের একজন।”

এই ইজান ১৬ আগস্ট বাংলাদেশে এসেছেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে থাই পুলিশের উপপ্রধান চাকথিপ রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

তবে বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি (ইন্টারপোল ডেস্ক) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, এখনও তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি।

“এই বিষয়ে থাইল্যান্ডের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ইন্টারপোলের পক্ষ থেকেও আমরা কোনো তথ্য পাইনি।”

থাইল্যান্ডের এক ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী চীনের পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন।

পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় শিদলোম এলাকার এরাওয়ান মন্দিরের কাছে ওই হামলায় নিহতদের ১৪ জনই বিদেশি নাগরিক।

হামলার পর প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চললেও কেউ এর দায় স্বীকার করেনি। হামলার উদ্দেশ্য উদঘাটনেও এখনও কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আসেনি বলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

হামলায় জড়িত সন্দেহে ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও মাত্র দুজনকে ধরতে পেরেছে থাই পুলিশ। বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে তাদের একজন স্বীকার করেছেন, সিকিউরিটি ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজে বিস্ফোরণের আগে যে ব্যক্তিকে মন্দিরে একটি ব্যাকপ্যাক রেখে যেতে দেখা গেছে, তাকে ওই ব্যাকপ্যাকটি সেই দিয়েছিল।

থাই পুলিশের মুখপাত্র প্রভূত থাবর্নসিরি বলেন, ওই ব্যক্তির জবানবন্দিতে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে যে, হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে অন্যদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

প্রভূত বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িতরা মানবপাচারকারীও হতে পারে এবং সন্দেহভাজন একজন যে চীনা পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন তাতে জন্মস্থান হিসেবে জিনজিয়ান উল্লেখ করা হয়েছে।

চীনা পাসপোর্ট ব্যবহারের বিষয়টি সামনে আসায় চীনের উইঘুর মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতিশীলরা হামলার পিছনে থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

গত জুলাইয়ে উইঘুরদের ১০৯ জনকে জোর করে চীনে ফেরত পাঠায় থাইল্যান্ড। হামলায় নিহতদের সাতজনই চীন ও এর অন্তর্ভুক্ত হংকংয়ের বাসিন্দা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত