হাসান মোরশেদ

২৪ মে, ২০১৫ ১৮:০১

দাসপার্টির খোঁজে: খসড়া পর্ব-৪

সর্বোচ্চ সম্মানের ঘোষণা দিয়ে ও রাষ্ট্র তাঁকে ভূষিত করেছে তৃতীয় খেতাবে, অথচ সহযোদ্ধাদের কাছে আজও তিনি শ্রেষ্ঠ বীর। বিশাল ভাটি অঞ্চলের বীরশ্রেষ্ঠ। হত্যা আর মরদেহ প্রদর্শনের ধরণে তাকে একাত্তরের যীশুও বলেন অনেকে। চুয়াল্লিশ বছর পর লেখক হাসান মোরশেদ বেরিয়েছেন শহীদ জগৎজ্যোতি দাস আর তাঁর দাসপার্টির খোঁজে। তাঁর সেই অনুসন্ধান ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে সিলেটটুডে২৪ ডট কম-এ। আজ চতুর্থ পর্ব

(তৃতীয় কিস্তির পরে)

এদিকে ২৭ মার্চ সুনামগঞ্জ ঘটে গেছে আরেক প্রতিরোধ যুদ্ধ। সকাল বেলা থেকেই প্রচার হতে থাকে যে কোন সময় সিলেট থেকে চলে আসবে পাক আর্মির দল। সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্বে চলতে থাকে প্রতিরোধের প্রস্তুতি। এর আগেই আনসার ক্লাবের ৫০ টি রাইফেল ও দুই হাজার বুলেট হস্তগত করা হয়েছে। ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে পাক আর্মি কনভয়টি এসে থানায় ঘাঁটি গাড়ে। এদিকে পঞ্চাশ জনের মতো তরুন, আনসার এডজুটেন্ট এর নেতৃত্বে আনসার দল, পুলিশ এবং ইপিআররা ও প্রস্তুতি নেয়। নদী পেরিয়ে গ্রাম থেকে আসতে থাকে সাধারন মানুষ দেশী অস্ত্র হাতে। এক পর্যায়ে যুদ্ধ শুরু হয়, শহীদ হন আনসার কমাণ্ডার আবুল হসেন ও রিকশাচালক গণেশ। দুজন পাকসেনা নিহত হয়, ক্যাপ্টেন মাহবুব সহ বাকীরা পালিয়ে যায় সিলেটের দিকে।

হবিগঞ্জ অঞ্চলের দুই এমএনএ অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রব ও কমান্ড্যাট মানিক চৌধুরী তখন  সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হবিগঞ্জেরই সন্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের সিনিয়র মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত ও তখন ছুটি কাটাতে বাড়িতে।

জেনারেল রব, কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী ও মেজর চিত্তরঞ্জন পরিকল্পনা করলেন জেলা সদর সিলেট মুক্ত করতে হবে। কিন্তু মাঝখানে বিপত্তি শেরপুর। শেরপুর- সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের সংযোগস্থল।  কুশিয়ারা নদীর উপর ফেরী।  এই ফেরী পাড়ি দিয়েই সিলেট যেতে হয় আবার ভৈরব থেকে এখানে স্টিমার আসে, এখানে থেকে ভাটি অঞ্চল দিরাই শাল্লা আজমিরীগঞ্জে লঞ্চে যাতায়াত করা যায়। কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্ব জেনেই শেরপুরে মোতায়েন আছে ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের দুই প্লাটুন সৈন্য, এক কিলোমিতার পর সাদিপুরে আরো এক প্লাটুন।  তিন ইঞ্চি মর্টার, মেশিন গান আর চাইনিজ রাইফেলে সজ্জিত তারা।

সিদ্ধান্ত হয় যে কোন মুল্যে শেরপুর, সাদীপুর জয় করে সিলেটের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ইতিমধ্যে সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র জনতার সাথে অস্ত্র হাতে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন থানার পুলিশ এবং সীমান্ত ফাঁড়ির ইপিআররা। দিরাই শাল্লার তরুন এমপিএ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও নৌকা লঞ্চ ভর্তি রসদ নিয়ে  এগিয়ে এসেছেন শেরপুর মুক্ত করার যুদ্ধে। পরিকল্পনা মতো তিনটা গ্রুপ তিনদিকে অবস্থান নেয় পাক আর্মির অজ্ঞাতে। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত’র নির্দেশে ভোররাতে একসাথে আক্রমন শুরু হয়। এলএমজি মর্টারের বিপরীতে থ্রি নট থ্রি রাইফেল। হতচকিত পাকবাহিনীর বিক্ষিপ্ত মর্টারের আঘাতে নিহত হয় অনেক গ্রামবাসী। ৭ ঘন্টা ব্যাপী যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর তিনজন শহীদ হলে ও পাক আর্মির তিন প্লাটুন সৈন্যের প্রায় সকলেই নিহত হয়। শেরপুর, সাদিপুর জয় করে মুক্তিবাহিনী এগুতে থাকে উত্তরের সিলেট শহরের দিকে।

এদিকে উত্তর সীমান্ত থেকে পুর্ব পরিকল্পনামতো একুশ জনের একটা গ্রুপ নিয়ে সিলেট শহরের দিকে এগিয়ে আসতে থাকলেন ক্যাপ্টেন মুত্তালিব। খাদিমের কাছে এসে তিনি চলে গেলেন কয়েকজনকে নিয়ে হাতের ডানে বরজান চাবাগানের ভেতর, তাদের কাছে তিন ইঞ্চি মর্টার। এখান থেকে এয়ারপোর্টে শুরু করলেন শেলিং আর এগারো জনের অবশিষ্ট দলটি চলে গেলো শহরের দিকে।  মর্টারের আঘাতে অয়েল ট্যাংকার  থেকে গোটা বিমান বন্দর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে গেলে অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য শহরের দিক থেকে পাক আর্মি এদিকে ছুটতে থাকে। ক্যাপ্টেন মুত্তালিব ও দ্রুত শহরে প্রবেশ করেন। প্রধান কয়েকটি পয়েন্টে মেশিন গান স্থাপন করে মুত্তালিব এসে ঢুকেন কারাগারে। তালা খুলে মুক্ত করে দেয়া হয় দুই থেকে আড়াই হাজার রাজবন্দীদের।
শেরপুরের দলটি ও এগিয়ে আসে সুরমা নদীর দক্ষিন পাড় পর্যন্ত।

নয় এপ্রিল থেকে বিমান হামলা শুরু হলে সিলেট শহরের আবার পতন হয়, শেরপুর ও দখল হয়ে যায়, সুনামগঞ্জের ও পতন ঘটে। ক্যাপ্টেন মুত্তালিব ফিরে যান ডাউকি, কয়েস চৌধুরী আগে থেকেই ঐ অবস্থানে ছিলেন। শেরপুরের পতন ঘটলে বালাট হয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও শিলং এর দিকে চলে আসেন। শরনার্থীর ঢল নামতে থাকে। বালাট শরনার্থী শিবির ও ইয়ুথ ক্যাম্প চালু করেন সুনামগঞ্জের এমএনএ দেওয়ান ওবায়দুর রাজা। ছাতকের বাঁশতলায় সেখানকার এমএনএ আব্দুল হক। সুরঞ্জিত সেন ঘুরতে থাকেন টেকেরঘাট, বালাট, বাঁশতলা, ভোলাগঞ্জ, ডাউকি হয়ে শিলং পর্যন্ত। এদিকে কয়েস চৌধুরী ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সবধরনের যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকেন।

মুলতঃ এঁদের কর্মতৎপরতাতেই পাঁচ নম্বর সেক্টর গঠিত হয়। জুলাই মাসে মুজিবনগর সরকার মেজর শওকত আলীকে সেক্টর কমাণ্ডার করে পাঠানোর আগে নাজিম কয়েস চৌধুরীই আনঅফিসিয়ালী সেক্টর সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন। টেকেরঘাট সাব-সেক্টর সরাসরিই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সৃষ্টি। এখানে পাঠানোর মতো সামরিক অফিসারের সংকট থাকায় সেন সাব-সেক্টর কমাণ্ডারের দায়িত্ব পালন করেন পরে অক্টোবরের দিকে মেজর মুসলেমউদ্দীন দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এদিকে ক্যাপ্টেন মুত্তালিব ডাউকি-  তামাবিল থেকেই দেশের ভেতর যুদ্ধ করতে থাকেন। এর মধ্যে হরিপুর যুদ্ধ অবিস্মরনীয়। জুন মাসে জৈন্তাপুরের যুদ্ধে আহত হলে শিলং এ চিকিৎসা শেষে তাকে বালাট সাব-সেক্টরের দায়িত্বে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ডিসেম্বরের ছয় তারিখে সুনামগঞ্জ শহরে তিনিই প্রবেশ করেন যুদ্ধজয়ী অধিনায়ক হিসেবে। সালেহ চৌধুরী তাঁর ভরাট কন্ঠে আমাদেরকে শুনাতে থাকেন যুদ্ধদিনের ইতিহাস। আমরা এবার আগ্রহ প্রকাশ করি তার নিজস্ব সম্পৃক্ততার কাহিনী জানতে।

জমিদার পরিবারের সন্তান হলে ও ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী ছিলেন পরবর্তী ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় এসে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে। মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু ও ইয়াহিয়ার আলোচনার দিকে সতর্ক চোখ রাখছিলেন সে সময়ের আর সকলের মতোই। সাংবাদিক হিসেবে পরিস্থিতি বিশ্লেষন করার বুঝার সুযোগ ছিলো আরেকটু বেশী। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সদ্যোজাত সন্তান ও স্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন গ্রামের বাড়িতে ২৫ মার্চের আগেই।

২৫ মার্চের আতংক ও বিভীষিকায় কাটে আর সব নগরবাসীর মতোই। পরে কারফিউ শিথিল হলে পত্রিকা অফিসে যান বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সম্পাদক তোয়াব খান অনুরোধ করেন থেকে গিয়ে কাজ চালানোর জন্য। সামরিক অধিদপ্তর থেকে নির্দেশ  এসেছে পত্রিকা অবশ্যই চালু রাখতে হবে না হলে সম্পাদক সহ সকলকে হত্যা করা হবে। সপ্তাহ দুয়েক পর সম্পাদককে জানান- আর সম্ভব না ঢাকা থাকা, যে করেই হোক  বাড়ি যেতে হবে। তোয়াব খান তখন অফিসিয়াল ছুটি মঞ্জুর করেন। সালেহ চৌধুরী ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ হয়ে দিরাই থানার গচিয়া গ্রামে পৌঁছেন পায়ে হেঁটে, বাইসাইকেল, গাড়ী, লঞ্চ চেপে।  তখন ২৬শে এপ্রিল ১৯৭১। পরিকল্পনা ছিলো সবার সাথে দেখা করে সীমান্ত পাড়িয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষন নেয়া অথবা মুজিব নগর সরকারের হয়ে সাংবাদিক হিসেবেই দায়িত্ব পালন।

অসহযোগ আন্দোলনের শুরু থেকেই দিরাই-শাল্লা অঞ্চলের সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তরুন সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। কিন্তু শেরপুর যুদ্ধের পর সেন চলে গেছেন উত্তর সীমান্তে, যুদ্ধকে আরো সংগঠিত করার জন্য। দিরাই এ তখন সংগ্রাম কমিটি চালাচ্ছেন ন্যাপ নেতা এডভোকেট আব্দুল লতিফ সর্দার, আওয়ামী লীগের তরুন কর্মী আব্দুল কুদ্দুস ও ডাক বিভাগের কর্মী চান মিয়া। পাকিস্তান আর্মি তখনো আসেনি এদিকে কিন্তু পুলিশ স্টেশনগুলোতে পাকিস্তান পন্থী অফিসাররা আছে, দালালরা দলবদ্ধ হয়ে গেছে, পাকিস্তান আর্মিকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। ন্যাপ-কমিউনিষ্ট পার্টি ও আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটির বিপরীতে পাকিস্তানপন্থী পিডিপির কার্যক্রম ছিলো এদিকে।  গোলাম জিলানী চৌধুরী ( পরবর্তীতে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতা) , খালেকের মতো পিডিপি নেতারা তখন প্রতাপশালী হয়ে উঠছে।

কিছুদিন বাড়িতে থেকে স্থানীয় অবস্থা পর্যবেক্ষন করে সালেহ চৌধুরী সিদ্ধান্ত নিলেন সীমান্তের দিকে যেতে হবে। মে মাসের মাঝামাঝি বালাট এসে পৌঁছান। বালাট তখন প্রধান শরনার্থী শিবির। হাজারে হাজারে মানুষ এসে জমা হচ্ছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ থেকে। চরম দুর্ভোগ ও অমানবিক পরিস্থিতি, কলেরায় শত শত শরনার্থী মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে থেকে তরুন বাছাই করে করে নানা প্রশিক্ষন শিবিরে পাঠাচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা। এখানে তার সাথে দেখা হয় কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট আব্দুল হামিদের সাথে। কিন্তু সালেহ চৌধুরী অপেক্ষা করছিলেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের জন্য। অপেক্ষার দীর্ঘপ্রহর শেষে সুরঞ্জিত সেনের সাথে তার দেখা হলো। সেন এখান থেকে টেকেরঘাট যাবেন, সাথে একজন ভারতীয় ক্যাপ্টেন। সালেহ চৌধুরী সেনের সঙ্গী হলেন। বালাট থেকে পশ্চিমের দিকে তারা টেকেরঘাট গেলেন।  টেকেরঘাটে অবস্থান করছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুজ জহুর ও হোসেন বখত।

এখানেই বিস্তারিত আলাপ হয়। সুরঞ্জিত সেন সালেহ চৌধুরীকে বলেন কলকাতায় যেতে চাইলে তিনি ব্যবস্থা করে দেবেন কিন্তু কিছুদিনের ভেতরই সেক্টর গঠন হবে, যুদ্ধ আরো তীব্র হবে। দেশের ভেতর কারো কারো থাকাটা জরুরী। সেন প্রস্তাব করলেন, সালেহ চৌধুরী এলাকায় ফিরে গেলে তাকে যুদ্ধ সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগীতা ও নিশ্চিত করা হবে। উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও এই প্রস্তাব সমর্থন করেন। সালেহ চৌধুরী আবার ফিরে আসেন নিজের গ্রামে।

মে মাসের শেষদিকে আওয়ামী লীগের কুদ্দুস ও চান মিয়া আসেন তার কাছে, জানান উচ্চপর্যায় থেকে তাদেরকে ও নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার সাথে কাজ করার জন্য। তখন তারা আশু করনীয় নির্ধারনে বসেন। প্রশাসন ভেঙ্গে পড়েছে তখন, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, গ্রামে গ্রামে ডাকাতি ও লুট চলছে। তারা সিদ্ধান্ত দিরাই-শাল্লা দুই থানা মিলে তারা টহল দিবেন, যুদ্ধের পক্ষে জনমত দৃঢ় করবেন এবং তরুনদের সীমান্তের ওপাড়ে পাঠাবেন প্রশিক্ষনের জন্য। এ পর্যায়ে তাদের সঙ্গী হলেন দুজন সাবেক সৈনিক মোঃ ইয়াসিন ও মন্তাজ আলী এবং আনসার কমান্ডার আব্দুল। সুনামগঞ্জ যুদ্ধে লুট করা রাইফেলগুলো থেকে কয়েকটি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিলো এদিকে সংগ্রাম কমিটির কাছে। এই রাইফেলগুলো এবার হাতে উঠে এলো তাদের। রাইফেল হাতে ছয়জনের দল নৌকা নিয়ে ঘুরতে থাকলেন দুই থানার গ্রামে গ্রামে আর এতেই জনমনে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি হলো, প্রচার হতে লাগলো এলাকায় শত শত মুক্তিযোদ্ধা চলে এসেছে।

চার জুলাই দিরাই সদর থেকে খবর এলো- আগের দিন পুলিশ ইন্সপেক্টর শরাফত উল্লাহর বাসায় দালালদের সভা হয়েছে। পরের বুধবার সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে মিলিটারী নিয়ে আসা হবে। সভা করে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠন হবে এবং তালিকা অনুযায়ী দেশদ্রোহীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

দ্রুত তারা ফিরে এলেন গ্রামের বাড়িতে। এদিএক বালাট থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রাজা এমএনএ, ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের নায়েক আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে আট/ দশজনের একটা মুক্তিযোদ্ধা দল  ওপাঠিয়েছেন। এ ছাড়া মহকুমা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তরুন আব্দুল মোতালেব ( আরো পরে যিনি শহীদ হয়েছেন আহসানমারায়) ও সাথে আছেন। সিদ্ধান্ত হলো পরের দিনই দিরাই থানা দখল করে নিতে হবে কিন্তু সাথে সাথে শাল্লা (ঘুঙ্গিয়ার গাঁও) থানা। ভোরবেলা দখল হবে শাল্লা, দুপুরের পর দিরাই।






আগের পর্বের সমূহের লিংক:

[প্রথম পর্ব]  [দ্বিতীয় পর্ব]  [তৃতীয় পর্ব]


 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত