
১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৪:০৬
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সহযোগী ও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রতিবাদকারী ছিলেন আবদুল খালেক খসরু। তার নামও এসেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায়।
বাংলাদেশ সরকারের গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তিনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রথম ধাপে রাজাকারের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে তার নাম আছে।
জানা গেছে, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ছিলেন খালেক। ১৯৭১ সালে শত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য চাকরি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। দেশকে শত্রুমুক্ত করতে জীবনবাজি রেখে অংশ নেন নানা গেরিলা অপারেশনে।
স্বাধীনতার পর শেখ ফজজুল হক মণির নেতৃত্বে গঠিত যুবলীগের বগুড়া শাখার নেতৃত্ব দেন খসরু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে প্রতিরোধ সংগ্রামে অংশ নেন তিনি। ওই বছরের ১২ অক্টোবর তিনি মারা যান। মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অবদানের কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেটে তার নাম আছে।
মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় রাজশাহী বিভাগের ৫৪ নম্বরে আবদুল খালেক খসরুর নাম আছে। তার বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের ২৩ জুন বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা থাকার কথাও (মামলা নম্বর ২৩, স্থগিত) তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তার বাবার নাম ও ঠিকানা তালিকায় উল্লেখ নেই।
এক প্রতিবেদনে প্রথম আলো জানিয়েছে, বগুড়ায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমন অন্তত ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন, আবদুল খালেক খসরু নামে বগুড়ায় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী কোনো রাজাকারকে তারা চেনেন না। এই নামে একজনকেই তারা চেনেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক খসরু। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় তাকেই রাজাকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বগুড়া সদর উপজেলা কমান্ডার আবদুল কাদের বলেন, বগুড়ার আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন আবদুল খালেক খসরু। যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। সবাই তাকে একনামে চিনতেন।
মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আবদুল খালেক খসরুকে মুক্তিযোদ্ধারা সবাই চিনতেন। তিনি সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার পর তিনি বগুড়া যুবলীগের নেতা ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে সশস্ত্র প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলাম। ওই বছরের ১২ অক্টোবর টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর পারে নিশ্চিন্তপুরে গুলিতে তিনি নিহত হন।
খালেকের ছোট ভাই অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মাজেদ খাজা বলেন, তার বড় ভাই একজন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম রাজাকারের তালিকায় থাকতে পারে না।
আপনার মন্তব্য