সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি, ২০২১ ১৬:৩১

ইন্টারপোলের রেড নোটিস: ইতালি ও ঢাকা থেকে দুই মানব পাচারকারী গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক অপরাধ পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) রেড নোটিশভুক্ত দুই বাংলাদেশি মানব পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের একজন কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল (৩৮) ইতালি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে, অপরজন মাদারীপুরের শাহাদত হোসেন (২৯)। সে ঢাকায় ধরা পড়েছে।

এ দুই ব্যক্তি গত বছর মে মাসে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানব পাচারকারীদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার আসামি।

বিজ্ঞাপন

সিআইডি এ দুজনসহ ছয় মানব পাচারকারীকে ধরিয়ে দিতে গত নভেম্বরে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায়। যে চার জন এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে তারা হলেন: মিন্টু মিয়া, স্বপন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তানজিরুল।

ইন্টারপোলের সঙ্গে ঢাকায় কাজ করা বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক মহিউল ইসলাম ইতালির কোসেঞ্জা শহরে জাফরের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ইতালি পুলিশ জাফরকে আদালতে উপস্থাপন করার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জাফরকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। ৪০ কার্যদিবসের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এ কর্মকতা আরো জানান, জাফর ইকবাল সম্পর্কে ইতালি যেসব তথ্য চেয়েছে, পুলিশ তা আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত করবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয় সত্যায়িত করে নথিপত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকে নথি যাবে ইতালিতে। ইতালির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তবে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে জাফরকে ফিরিয়ে আনা যাবে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা থেকে শাহাদতকে গ্রেপ্তারের খবরটি বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেন সিআইডি সূত্রে জানা গেছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক গণমাধ্যমেকে এ কর্মকর্তা বলেন, শাহাদত ঢাকায় আসেন ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির আগে গত ৮ নভেম্বর। দুবাই থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই তাকে বিমানবন্দর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। শাহাদতের বিরুদ্ধে মাদারীপুরে একটি মামলা ছিল। মাদারীপুর পুলিশের অনুরোধে শাহাদতকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ জানিয়েছে, মাদারীপুরকেন্দ্রিক মানব পাচারকারী দলের হোতা জাফর ও শাহাদত। দুজনের বিরুদ্ধেই বিদেশে ভালো চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতারণা, মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি করা ও হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শাহাদত মাদারীপুরের নজরুল ইসলাম মোল্লা নামের একজন মানব পাচারকারীর সহযোগী।

লিবিয়ার মিজদাহতে বাংলাদেশিদের হত্যা, মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের ঘটনায় সিআইডি বাদী হয়ে পল্টন ও বনানীতে তিনটি মামলা করে। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরও ২৩টি মামলা হয়। সিআইডি মোট ২৫টি মামলার তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এসব মামলায় আসামি ২৯৯ জন, গ্রেপ্তার আছেন ১৭১ জন এবং ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ পর্যন্ত দুটি মামলায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে তারা।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে ৮৪৮টি মামলা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত