সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:২৪

জয় পেয়েই সুর পাল্টালেন কাদেরের ভাই

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জার কাছে পাত্তাই পেলেন না বিএনপি ও স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করা জামায়াতের প্রার্থী।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী মিলিয়ে যত ভোট পেয়েছেন, কাদের মির্জা একাই পেয়েছেন তার কয়েক গুণ ভোট।

শনিবার সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ভোট শেষে যখন ফলাফল আসতে শুরু করে, তখন দেখা যায় নৌকা প্রতীকে ভোট পড়েছে বিপুল পরিমাণে। ধানের শীষ আর জামায়াত নেতার মোবাইল ফোনে ভোট পড়েছে অনেক কম।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর সম্মিলিত ভোটের পেয়ে নৌকায় ভোট পড়েছে প্রায় সাড়ে তিন গুণ।

নয়টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট পড়েছে ১০ হাজার ৭৩৮টি। বিএনপির ধানের শীষে ভোট পড়েছে এক হাজার ৭৭৮। জামায়াত নেতার মোবাইল ফোনে পড়েছে এক হাজার ৪৫১টি।

ভোটের আনুষ্ঠানিক ফল আসার আগেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অবস্থানকারী কাদের মির্জা নিজেকে জয়ী ঘোষণা করেন। এ সময় সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।

কাদের মির্জা বলেন, প্রমাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ভাই ওবায়দুল কাদের সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারেন।

তাকে ভোট দেয়ায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কাদের মির্জা বলন, তিনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করবেন।

গত কয়েকদিন সমালোচনা করলেও ভাই কাদেরের প্রশংসা করেছেন মির্জা। বলেন, রাজনীতির বিষয়ে সব দায়িত্ব নিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি চলবেন। এতদিন যেসব কথা বলেছেন, সেগুলো আর বলবেন না।

পরাজিত দুই প্রার্থীর সঙ্গে রোববার দেখা করার কথাও বলেন কাদের মির্জা।

দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল বসুরহাট নিয়ে। প্রচার চলাকালে মির্জা সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে আন্দোলনে নেমে দেশজুড়ে মনযোগের কেন্দ্রে আসেন।

কাদের মির্জা বলেছিলেন, একটি ভোটও যদি কারচুপি করে নেয়া হয়, তাহলে তিনি মানবেন না। প্রশাসন কারচুপি করলে পা ভেঙে মোড়ে ঝুলিয়ে রাখার কথাও বলেন।

অবশ্য ভোটের দিন তিনি আর কোনো অভিযোগ করেননি। বলেন, তার আর কোনো অভিযোগ নেই।

এই পৌরসভায় নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর প্রতিক্রিয়াও ছিল আগ্রহোদ্দীপক। দুই জনই ভোটের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, তাদের কোনো অভিযোগ নেই।

সকালে ভোট দিয়ে বিএনপির প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমি যেই দুই চারটা কেন্দ্রে গেসি সেখানে সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। কোনো সমস্যা নাই। জয়-বিজয় আল্লাহর হাতে।… ‘অবশ্যই আমি ফলাফল মেনে নেব। এই সুন্দর নির্বাচনের ফলাফল না মানলে আমি কেন রাজনীতি করি?’

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে না পারলেও বসুরহাটে তারা লড়াই করে স্বতন্ত্র হিসেবে। দলের নেতা মোশারফ হোসেন লড়াই করেন মোবাইল ফোন প্রতীকে।

ভোটের প্রশংসা করেছেন তিনিও। নিজে ভোট প্রয়োগ শেষে মোশারফ বলেন, ‘আগে তো ভোট দেয়ার সুযোগ ছিল না, সুযোগ এসেছে। জনগণ যদি তাদের মতামত সঠিকভাবে প্রয়োগের সুযোগ পায়, তাহলে ইভিএমের যে আতঙ্ক সেটাও কেটে যাবে। সরকারেও গ্রহণযোগ্যাতা বাড়বে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত