সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:৫৩

পুলিশ হত্যা : কর্তব্যপালনে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যপালনের সময় আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘বিভিন্ন নাম দিয়ে একই গোষ্ঠী এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। তারা কখনও আনসার উল্লাহ বাংলা টিম, কখনও আইএস, কখনও আল কায়েদা ইত্যাদি নাম ব্যবহার করে অপকর্ম সংঘটন করছে।’

বুধবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আশুলিয়ায় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত শিল্পপুলিশ সদস্যদের দেখতে যান তিনি।

বিদেশি নাগরিক হত্যা, ব্লগার-প্রকাশক হত্যা ও হত্যাচেষ্টাগুলোকে আগে "বিচ্ছিন্ন ঘটনা" হিসেবে উল্লেখ করলেও পুলিশ হত্যা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, গত কয়েক মাসে ব্লগার-প্রকাশকদের উপর যেভাবে হামলা হয়েছে, পুলিশের উপর এই হামলা হয়েছে একই কায়দায়।

সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যদের পালাবদলের সময় এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের নতুন দল গাড়ি থেকে নামার সময় হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তাদের উপর্যপুরি হামলায় শিল্প পুলিশের কনস্টেবল মুকুল মারা যান।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, ‘জঙ্গিদের রায়’ কার্যক্রম নস্যাৎ করার জন্য এ ধরনের হামলা চালানো হচ্ছে।

“গোয়েন্দা পুলিশ শিগগিরই দল গঠন করে অন্য জঙ্গিদের ধরার কাজ শুরু করবে। এরা মানবতার শত্রু, মানুষের শত্রু। নৃশংসভাবে এরা ছুরিকাঘাত করে পুলিশকে হত্যা করেছে। চেঞ্জিং আওয়ারে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই এই হামলা হয়।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যপালনের সময় আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। 

উল্লেখ্য, বুধবার সকালে সাভারের বারইপাড়ায় ভ্যান থেকে নামার সময় এক পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা, আহত আরেক পুলিশ সদস্যকে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম মুকুল বলে জানা গেছে। আহত পুলিশ সদস্যের নাম নুরে আলম।

ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান কিরণ জানান, বুধবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে একটি চেকপোস্টে এ ঘটনা ঘটে।

সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, “থানা ও শিল্প পুলিশের পাঁচ সদস্য সকালে বাড়ইপাড়া চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা করে। এতে কনস্টেবল মুকুল হোসেন ও নূরে আলম গুরুতর আহত হন, বাকিরাও আঘাত পান।”

তাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হলে অপারেশন থিয়েটারেই মুকুলের মৃত্যু হয়।

কনস্টেবল নূরে আলমের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে শিল্প পুলিশ-১ এর উপ পরিচালক কাওসার শিকদার জানিয়েছেন।

কারা এ হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি পুলিশ কর্মকর্তারা। হামলার সময় কাওকে আটকও করা যায়নি।

এর আগে দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ২২ অক্টোবর রাতে গাবতলী সেতুর কাছে পর্বত সিনেমা হলের সামনে পুলিশের একটি তল্লাশি চৌকিতে একই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে।

সেখানে এক যুবকের ছুরিকাঘাতে ইব্রাহিম মোল্লা (৪০) নামে পুলিশের এক এএসআই নিহত হন।

এর দুই দিন পর পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলায় দুইজন নিহত হন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সে সময় বলেছিলেন, গাবতলীতে এএসআই খুনের সঙ্গে ইমামবাড়ার বোমার যোগসূত্র রয়েছে তারা বস্তুগত প্রমাণ পেয়েছেন।

ঘটনার পরপরই আহতদের দেখতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত