সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ মার্চ, ২০২১ ২১:২১

ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ না করার নির্দেশ

ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীর পূর্ণ নাম, ঠিকানা, ছবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থলের নামসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য অনলাইন, সংবাদপত্র ও সম্প্রচারমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ বন্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট।

সোমবার (৮ মার্চ) এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় সংবাদমাধ্যমে নির্যাতিত নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বিধিনিষেধের উল্লেখ আছে। এ বিধান বাস্তবায়নে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই রিট করেন, যার ওপর আজ শুনানি হয়। নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশে বিধিনিষেধসংক্রান্ত আইনের ১৪ ধারার বিধান বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে হলফনামা আকারে আদালতে পৃথক প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মাহফুজুর রহমান নিজেই শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ইমরান আলী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

রুলে ধর্ষণ ও যৌন অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশে বিধিনিষেধসংক্রান্ত আইনের ১৪ ধারার বিধান বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব, অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ ইত্যাদি মাধ্যমে ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ পায়, এমন কোনো সংবাদের লিংক বন্ধের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়েও রুল হয়েছে।

এ ছাড়া মামলা তদন্ত বা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ভুক্তভোগীর নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা, ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের জন্য মানহানিকর ও অপমানজনক—এমন কোনো সংবাদ যাতে গণমাধ্যমে প্রকাশ না করা হয়, তা নিশ্চিতে চার বিবাদীকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল হয়েছে বলে জানান রিটকারী।

তথ্যসচিব, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, প্রেস কাউন্সিল ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৩ মে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪(১) ধারা বলছে, আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হয়েছেন এমন নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তত্সম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোনো সংবাদপত্রে বা অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাবে, যাতে ওই নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়। আর উপধারা (১)–এর বিধান লঙ্ঘন করলে ওই লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের প্রত্যেকে অনধিক দুই বছর কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত