শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

২৭ এপ্রিল, ২০২১ ১৩:২৬

শ্রীমঙ্গলে বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে উদ্দীপ্ত তারুণ্য

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে গনপরিবহন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। এতে করে দুর্ভোগে পরেছেন নিত্য আয়ের মানুষেরা। আর মধ্যবিত্তরা পরেছেন মহাবিপাকে। তারা না পারছেন কইতে, না পারেছন সইতে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এমন দূর্ভোগে থাকা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে উদ্দীপ্ত তারুণ্য নামে একটি স্থানীয় সামাজিক সংগঠন।

তারা গত ২০ মার্চ তাদের সংগঠনের ফেসবুক পেইজে একটি পোষ্ট দিয়ে ‘লকডাউনের কারণে খাদ্য সংকটে আছেন এমন কেউ থাকলে  তাদের ইনবক্স বা ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলেন।’

একই সাথে তাদের এই কাজে সাহায্য করার জন্য তারা সমাজের বিত্তশালী, দানশীল ব্যক্তিদের অনুরোধ জানায়।  তাদের এ সংগঠনে মোট সদস্য সংখ্যা ৫০ জন। ওই দিন রাতেই তারা ফোন পেলে একটি পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়। প্রথমে তারা সংগঠনের সদস্যদের চাঁদায় এই কার্যক্রম শুরু করে। পরে সমাজের অনেক দানশীল ব্যক্তিদের নিকট থেকে প্যাকেজ খাবার সংগ্রহ করে। এখন তারা মানুষদের নিকট থেকে আর্থিক সাহায্য এনে নিজেরাই বাজার থেকে খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করে পেকেট করছে।

গত রোববার রাত পর্যন্তÍ তারা এ উপজেলার ৫০টি পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। খাদ্যসামগ্রীর মধ্য রয়েছে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি আলু, ২ কেজি পেয়াজ, ১ লিটার তেল ও ১ কেজি লবণ।

উদ্দীপ্ত তারুণ্য’র প্রধান সমন্নয়ক হৃদয় শুভ জানান, লকডাউনের কারণে যারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যাদের জীবনযাত্রা একেবারে থমকে যায় যেমন গৃহ কর্মী, গৃহ শিক্ষক, দিন মজুর, নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, সেলুন কর্মী এসব মানুষের বাড়ীতে তারা  খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। তবে এই খাদ্যসামগ্রীকে তারা সহায়তা বা উপহার বলতে রাজি নয়। তারা শুধু তাদের সামর্থনুযায়ী  মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন বলে জানান।

উদ্দীপ্ত তারুণ্য’র সদস্য রাজেশ ভৌমিক বলেন,‘কিছু পাওয়ার জন্য আমরা এই কাজ করছি না। মানুষের জন্য কাজ করে মনে আনন্দ পাই শুধু এটুকুই আমাদের প্রাপ্তি, এতেই আমাদের আনন্দ।’

সংগঠনের মুখপাত্র শিমুুল তরফদার বলেন, ‘আমরা যাদেরকে এই খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি কখনোই তাদের ছবি তুলছিনা। এছাড়া অনেক মধ্যবিত্ত দিনের আলোয় খাদ্যসহায়তা নিতে সংকোচ বোধ করেন। ওই সব পরিবারকে আমরা রাতের আধারে খাদ্যসামগ্রী তাদের বাড়ীতে পৌঁছে দিচ্ছি। আবার ফোন পেয়ে অনেক পরিবারের ঘরের দরজায় রেখে আসছি। তিনি বলেন, এখনো সমাজে কিছু ভাল মনের মানুষ আছেন যারা মানুষের উপকার করতে চান। আমরা এসব মানুষদের নিকট থেকে সাহায্য এনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি। আবার অনেকে নিজ উদ্যোগেই আমাদের সহায়তা করছেন। আমরা এসব ভাল মানুষ গুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত