সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ২০:৫০

‘আপত্তিকর’ তথ্য নিয়ন্ত্রণে ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি হবে : প্রতিমন্ত্রী তারানা

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরী কমিশন বিটিআরসি পরিদর্শনে গিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ‘আপত্তিকর’ কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

দায়িত্ব নেওয়ার পর মঙ্গলবার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি কার্যালয়ে প্রথম পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ একটি প্রস্তাব দিয়েছিল চুক্তি করতে, তবে কিন্তু তারা করেননি। কনটেন্টের জন্য ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ ইনডেমিনিটি (দায়মুক্তি) চেয়ে এ আবেদন করেছিল।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির সেই সুযোগ আবার নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার ব্যাখ্যাও তুলে ধরেন তিনি।

“ফেসবুকের সঙ্গে যেন চুক্তি করতে পারি, যাতে যেসব কন্টেন্টগুলো আছে মানহানিকর, নারীর প্রতি অবমাননাকর, রাজনৈতিক কারণে বা জঙ্গি উৎসাহ প্রদান করে, দেশে বিভিন্নভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্ট করে, তা কন্ট্রোল করার জন্য ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি করা জরুরি।”

তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের মধ্যে মাধ্যম হিসেবে ফেসবুককে ব্যবহার করে নানাভাবে বিভিন্নজনকে হয়রানির ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এছাড়া ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে কয়েক বছর আগে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধদের উপর হামলাও হয়।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো চুক্তি নেই। তাই কোনো আপত্তিকর কনটেন্ট প্রকাশ বন্ধ করতে ফেসবুককে অনুরোধ জানিয়েও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফল পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। সে সময় সাইবার সিকিউরিটিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

তারানা হালিম বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তির একটা সুযোগ ছিল। যে চুক্তিতে ফেসবুককে কনটেন্টের ব্যাপারে ইনডেমিনিটি দেওয়া হতো, সে সুযোগ কাজে লাগানো হয়নি।

তিনি বলেন, ওই সময় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মতো বড় সুযোগও হাতছাড়া হয়ে গেছে। কেন সেসময় ওই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়, সেটা সেই সময়ের সরকারই ভালো বলতে পারবে।

গত আড়াই বছরে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমের কর্তৃপক্ষের কাছে ৩৭ জনের তথ্য চাইলেও কোনো সাড়া পায়নি বাংলাদেশ সরকার।

সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিটিআরসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তারানা বলেন, “আমি চাই, সাইবার সিকিউরিটি ইস্যুতে যেন দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়। আপনারা জানেন গ্রামে গঞ্জে নারীরা লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে, সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়ে অনেক নারী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন।”

অবৈধ মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট, অবৈধ ভিওআইপির বিরুদ্ধে অভিযান চালু রাখার নির্দেশনাও দেন প্রতিমন্ত্রী।

ডটবাংলা ডোমেইন চালু করার সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী একুশে ফেব্রুয়ারিতে এই ডোমেইন চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কাজের ক্ষেত্রে বিটিআরসিকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত