সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ মার্চ, ২০২৩ ১৫:০০

পাসপোর্ট অফিসে অনিয়ম বন্ধ ও টোকেন সিস্টেম চেয়ে চিঠি

দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বেআইনি অগ্রাধিকার দেয়ার অনিয়ম বন্ধ এবং টোকেন সিস্টেম চালু করে ডিজিটাল বোর্ডে সিরিয়াল প্রদর্শন করতে পাসপোর্ট অফিস বরাবরে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। ঢাকার বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক বরাবর এ চিঠি পাঠিয়েছেন আইনজীবী মো. আবু তালেব।

ডাকযোগে ২২ মার্চ পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, পাসপোর্টের জন্য আসা যেকোনো মানুষের বিরুদ্ধে যেকোনো দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বেআইনি অগ্রাধিকার দেয়া তথা যেকোনো অনিয়ম বন্ধ করতে, সেবা প্রার্থীদের লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা প্রথা বাতিল করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টোকেন সিস্টেম চালু করে ও ডিজিটাল বোর্ডে সিরিয়াল প্রদর্শন করার সুযোগ, মানুষের বসার ব্যবস্থা এবং বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ ছাড়া সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য ও সমান নিয়ম চালু করতে হবে যাতে কোনো ব্যক্তি বিশেষ অবৈধ কোনো সুবিধা গ্রহণের সুযোগ না পান। এ সকল কার্যক্রম হাতে নিয়ে গৃহীত ব্যবস্থা ও কার্যক্রম লিখিতভাবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে অনুরোধ করেন এই আইনজীবী। অন্যথায় উপযুক্ত প্রতিকার চেয়ে আদালতে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা বলা হয়েছে।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে পরিচালক বরাবর দেয়া চিঠিতে এই আইনজীবী বলেন, গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার পূর্বনির্ধারিত সময়ে পরিবারের সদস্যদের  ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি তোলার জন্য বেলা একটায় উপস্থিত হই। লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে ৩টার দিকে সিরিয়াল পাই। সিরিয়াল পেয়ে পুনরায় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সকল কাগজপত্র অফিসার দ্বারা ভেরিফিকেশন করিয়ে নিই। এরপর পুনরায় একটি কক্ষে সিরিয়াল দিয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করি।

চিঠিতে পরিচালককে উদ্দেশ করে এই আইনজীবী বলেন, আপনার অফিসের সার্বিক অব্যবস্থাপনা আমাকে দারুনভাবে কষ্ট দিয়েছে।

ডিজিটাল ও স্মার্ট-বাংলাদেশ সরকারের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে যেকোনো সেবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে ও স্মার্টলি প্রদান করা। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের অনেক অফিস ও বেসরকারি ব্যাংক ও বীমা অফিসে কেউ সেবা নিতে আসলে তাদেরকে টোকেন প্রদান ও ডিজিটাল বোর্ডে/স্ক্রিনে সিরিয়াল দেখানোর মাধ্যমে সেবার অগ্রগতি নিশ্চিত করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রচলিত আইন, বিধি ও সিটিজেন চার্টারে অনুসারে সহজ লভ্য ও ভোগান্তিহীন পাসপোর্ট পাওয়া আমার ও আমার মতো সাধারণ নাগরিকদের জন্য অনেক দুর্লভ ও ভোগান্তিকর বিষয়। আনসার সদস্যরা হ্যান্ড মাইকে প্রচার করে আসছিল যে, ‘আপনারা সকলে লাইনে দাঁড়ান ও কোন দালালকে টাকা দেবেন না।’ এ ঘোষণা হতেই স্পষ্ট, মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সিরিয়াল নিতে হয় এবং সেখানে দালালের দৌরাত্ম্য রয়েছে। আমরা যখন লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল নেয়া, কাগজপত্র দেখানো, ফিঙ্গার দেয়া ও ছবি তোলার কাজ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে করেছি তখন অনেক মানুষকে কোনো লাইন না ধরে কিংবা অন্য নিয়ম না মেনে সরাসরি ফিঙ্গার দেয়া ও ছবি তোলার রুমে গিয়ে দ্রুত কাজ সেরে চলে গিয়েছেন। যেকোনো নাগরিক উপরোক্ত যেকোনো কাজের জন্য পাসপোর্ট অফিসে গেলে সাথে সাথেই যাতে একটি সিরিয়াল টোকেন নিজে পাঞ্চ করে হাতে নিতে পারেন কিংবা স্টাফের মাধ্যমে পেতে পারেন এবং ডিজিটাল বোর্ডে যাতে সুনির্দিষ্ট বুথ নং প্রদর্শন করে সিরিয়াল ও সময় পাওয়া যায়- তার ব্যবস্থা করা দুরূহ কোনো কাজ নয়। তাতে মানুষের শারীরিক উপস্থিতি কমে।

এত বড় অফিস ভবন অথচ সুনির্দিষ্ট রুমসমূহের সামনে বসার স্থান না দিতে পারাটা সত্যিই দুঃখজনক বিষয়। সেখানে অবস্থানকালে পাঁচ ঘণ্টা সময়ে দেখিনি যে, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা কিংবা সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ছবি তোলা কিংবা আনুষঙ্গিক কাজের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত