১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৫:০০
প্রতীকী ছবি
মাজারসহ ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এখনই সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৪৭ নাগরিক।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, হাজারো শিক্ষার্থী-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে আবারও গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে বাংলাদেশে। সব মত, পথ, বিশ্বাস ও শ্রেণি-পেশার মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী-জনতা জীবন দিয়েছে অকাতরে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের বুলেটের যন্ত্রণা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। শহিদ পরিবারের বন্ধু-স্বজনদের চোখের জলও শুকায়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমরা দেখেছি, প্রায় সব ধরনের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠান বা বাসা-বাড়িতে হামলা হয়েছে। এসব হামলা বন্ধে অথবা হামলার পর দোষীদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ ছিল তখন। অনেক ক্ষেত্রে হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল বলে তথ্য রয়েছে। নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার সমাজে গভীর বিভাজন সৃষ্টির জন্য এসব করেছিল বলে অনেকের ধারণা। হয়তো সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় থাকতে হয়েছিল । কিন্তু হাজারো শহিদের রক্তে অর্জিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নতুন সময়ে তারা কেন নিশ্চুপ, সেই উত্তর মিলছে না।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গত কয়েকদিনে দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে সংগঠিত হয়ে মাজারসহ আধ্যাত্মিক স্থাপনায় হামলা হচ্ছে। এর আগে আমরা দেখেছি মন্দিরে হামলা হতে। এসব কোনো ঘটনায় কাউকে বিচারের আওতায় আনতে বা মামলা করার খবরও পাওয়া যায়নি। মাজারে হামলার কোনো ঘটনায়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা সমাজের গভীরের ক্ষতকে বিস্তৃত করবে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভেতর বিভাজন আরও বাড়াবে। যা আগের মতো অগণতান্ত্রিক শক্তির হাতে বাংলাদেশকে ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করবে।
তাই আমরা মনে করি, সব সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্ব অটুট রাখতে মন্দির-মাজারসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা বন্ধে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এখনই সক্রিয় হতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েরও এ ক্ষেত্রে নিশ্চুপ থাকার সুযোগ নেই।
বিবৃতিদাতার হলেন- আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ; আবু সাঈদ খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক; আব্দুল হাই শিকদার, কবি; কাজল শাহনেওয়াজ, কবি; মুস্তাফা জামান, শিল্পী; অরূপ রাহী, শিল্পী; আর রাজী, শিক্ষক, সাংবাদিকতা বিভাগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; রাখাল রাহা, লেখক ও সম্পাদক; আহমেদ স্বপন মাহমুদ, কবি ও প্রাবন্ধিক; বীথি ঘোষ, শিক্ষক ও সাংস্কৃতি সংগঠক; ফেরদৌস আরা রুমী, কবি ও অধিকারকর্মী; বাকী বিল্লাহ, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী; সাঈদ বারী, প্রকাশক; এহসান মাহমুদ, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক; রাফসান আহমেদ, চলচ্চিত্র কর্মী; সৈকত আমীন, কবি; সাদিক মোহাম্মদ আলম, প্রযুক্তি পরামর্শক; পূরবী তালুকদার, নারী অধিকার কর্মী; মারজিয়া প্রভা, অ্যাক্টিভিস্ট; মোশফেক আরা, মানবাধিকার কর্মী; কামরুজ্জামান রিপন, উন্নয়ন কর্মী; সুস্মিতা চক্রবর্তী, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; মোহাম্মদ রোমেল, অ্যাক্টিভিস্ট; মাসুদ ইমরান মান্নু, শিক্ষক, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; মশিউল আলম, কথাসাহিত্যিক; দীপক সুমন, অভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক; সায়েমা খাতুন, নৃবিজ্ঞানী; হেলাল মহিউদ্দীন, অধ্যাপক নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি; লতিফুল ইসলাম শিবলী, শিল্পী; রেজাউর রহমান লেনিন, মানবাধিকার কর্মী; সালাহ উদ্দিন শুভ্র, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক; মারুফ মল্লিক, সাংবাদিক; সাখাওয়াত টিপু, কবি ও সম্পাদক; ওমর তারেক চৌধুরী, লেখক ও অনুবাদক; মোশরেকা অদিতি হক, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; কাজী জেসিন, কবি; রায়হান রাইন, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; জি এইচ হাবীব, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; ড. শরৎ চৌধুরী, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; দেবাশীষ চক্রবর্তী, শিল্পী ও লেখক; পলিয়ার ওয়াহিদ, কবি; মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, কথাসাহিত্যিক; আ-আল মামুন, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; অমল আকাশ, শিল্পী; মাহবুব রাহমান, প্রকাশক; তুহিন খান, কবি ও চিন্তক; ফারুক ওয়াসিফ, কবি ও সাংবাদিক।
আপনার মন্তব্য