সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ মে, ২০১৬ ১৩:৫০

রাজনৈতিক লাভের জন্য সরকার জামায়াতকে প্রশ্রয় দিচ্ছে: ইমরান

যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে আজ(রোববার) শাহবাগে হরতালবিরোধী অবস্থান এবং মিছিল করে গণজাগরণ মঞ্চ। যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ পিটিশন খারিজের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল থাকার প্রেক্ষিতে জামায়াতে ইসলামী এই হরতালের ঘোষণা দেয়।

সকাল ১১টা থেকে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে জামায়াতের হরতালের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। হরতালবিরোধী নানা স্লোগানের মাধ্যমে অবস্থান কর্মসূচি চলে।

হরতালবিরোধী অবস্থান কর্মসূচিতে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত-শিবির এখনো নিষিদ্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। তিনি বলেন, "যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে আমরা মহান সংসদে এক কোটি গণস্বাক্ষর জমা দিয়েছিলাম। সরকারের তরফ থেকে বারবার শুধু জামাত নিষিদ্ধ করার বক্তব্যই দেয়া হচ্ছে। অথচ কোন অদৃশ্য কারণে এখনো জামাত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ হচ্ছে না, তা আমাদের বোধগম্য নয়।"

তিনি বলেন, "যারা বলছেন জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হলে জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হবে, তারা জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত নন। জামায়াত সবসময়ই একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন। তারা সবসময়ই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই যুদ্ধাপরাধী সংগঠনটি নামে-বেনামে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী অপতৎপরতার মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।"

জামায়াত নিষিদ্ধের ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতার প্রসঙ্গে ইমরান এইচ সরকার বলেন, "জামায়াত নিষিদ্ধ না করার পেছনে সরকারের রাজনৈতিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা এই যুদ্ধাপরাধী জঙ্গিবাদী সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ না করে এদের দেখিয়ে জনগণকে বোঝাতে চায় যে, যেহেতু জামায়াতের সন্ত্রাস, অপতৎপরতা রয়েছে তাই জামায়াত দমন করতে তাদের ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজন রয়েছে। একারণে জামায়াতের সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদী কার্যক্রমকে সরকার নিষিদ্ধ না করে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে এই ইঁদুর বেড়াল খেলায় ক্ষতি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। তাই আর কোনো তালবাহানা না করে জামায়াত-শিবিরের সবরকম কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।"

তিনি বলেন, "সারাদেশে যখন একের পর এক হত্যাকাণ্ড চলছে, তখন সরকার খুনিদের গ্রেফতার করার বদলে 'দেশে জঙ্গি নেই-তা প্রমাণে ব্যস্ত। আমরা জানতে চাই, তাহলে কারা এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটাচ্ছে। তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনুন। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। তাহলেই জঙ্গিবাদ দমন সম্ভব হবে, কেবল বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব নয়।"

যুদ্ধাপরাধী নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহালের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির প্রসঙ্গে ইমরান এইচ সরকার বলেন, "বরাবরের মতোই পাকিস্তান তার দোসর যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দেয়া শুরু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় হয়তো বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের অন্যান্য মিত্ররাও বক্তব্য-বিবৃতি দেয়া শুরু করবে। এদের এই অযাচিত নাক গলানো বন্ধ করতে দ্রুত যুদ্ধাপরাধী আলবদর নিজামীর রায় কার্যকর করতে হবে।"

বেলা ১২টার দিকে অবস্থান কর্মসূচি থেকে হরতালবিরোধী মিছিল শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে শাহবাগে ফিরে আসে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত