সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ মে, ২০১৬ ২৩:০২

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং মিশন প্রধান ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের চলমান বিচার সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটি পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং বাইরে থেকে কারোর এ বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনিরা ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে মর্মাহত। এই ধরনের নৃশংসতা ও হত্যাকাণ্ড কেউ সমর্থন করতে পারে না।’

বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭১ সাল থেকে একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের মধ্যে যে সম্পর্কে ছিল তা দুটি দেশের মধ্যে ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।’

রামাদান আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের নৃশংসতায় লিপ্ত ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক দলের জন্য ‘রাজনৈতিক আত্মহত্যা’। খবর বাসসের।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল বা তাদের নেতারা যদি ইসরায়েলের কোনো রাজনৈতিক দল, তাদের নেতা এবং এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে, সেটি হবে তাদের রাজনৈতিক আত্মহত্যা। এই ধরনের কাজ ফিলিস্তিনি জনগণের চেয়েও দলের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে।’

রামাদান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই দৃঢ়। রাজনৈতিক ও ধর্ম বিশ্বাস নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি দৃঢ় সমর্থন রয়েছে।’

ফিলিস্তিন দূতাবাসে এক সাংবাদিক সম্মেলনের পর সম্প্রতি ভারতের আগ্রায় ইসরায়েলি লিকুড পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দূত একথা বলেন।

‘নকবা দিবসে’র ৬৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আল নকবা অর্থ হচ্ছে ‘ধ্বংস’। ১৯৪৮ সালে নতুন রাষ্ট্র ইসরায়েল গঠনের পথে ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের শত শত নগর ও গ্রাম ধ্বংস এবং হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের পৈতৃক বসতবাড়ি থেকে বহিষ্কারের ঘটনাকে এই দিবসে স্মরণ করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে দূত বলেন, ‘এ ধরনের সাক্ষাৎ ‘নিষিদ্ধ’ এবং দলের নীতির পরিপন্থি বলে বিএনপি প্রধানের উচিত দলের নেতাকর্মীদের কাছে সুস্পষ্ট বার্তা পাঠানোর জন্য আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।’

এ সাক্ষাতের বিষয়ে বিভিন্ন দৈনিকে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, ‘বিএনপি নেতা তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ইসরায়েলের সঙ্গে দলের (বিএনপি) কোনো সম্পর্ক নেই। ফিলিস্তিনিদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি দলের খুবই জোরালো সমর্থন রয়েছে।’

মির্জা ফখরুলের উদ্ধৃতি দিয়ে রামাদান আরো বলেন, ‘আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলের লোকটিকে চিনতেন না এবং সবকিছুই ভুলক্রমে ঘটেছে।’

এই দূত বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপি’র কোনো সম্পর্ক নেই এবং তিনি ‘ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপি’র সম্পর্ক অস্বীকার’ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। এই বিষয়ে দল ‘দুঃখিত’।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত