নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ আগস্ট, ২০১৬ ১৩:১৩

কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় শাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জঙ্গিবাদ বাড়তে পারে : জাফর ইকবাল

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণেই শাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

তিনি বলেন, একজন অদক্ষ এবং অযোগ্য ভিসি দিয়ে ক্যাম্পাস চলছে। একসময় যারা হিযবুত তাহরির মতো সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিল তাদের দিয়ে চালানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে প্রতীকী অনশন পালনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের দ্বারা জঙ্গিবাদী কার্যক্রম শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) থেকে ইতোমধ্যেই ৪ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গত বছর ৩০ আগস্ট শাবি উপাচার্য আমিনুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের আহ্বানে কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায় উপাচার্যের আর্শীবাদপুষ্ট ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। পরে তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেও তা কার্যকর হয়নি। বহাল আছেন উপাচার্যও।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) এর প্রতিবাদে অনশন কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক ড মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম দিপু।

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে প্রতীকী অনশন পালন করেন মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা সকাল ১০ টা থেকে প্রতীকী অনশন শুরু করেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৩ এপ্রিল থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’। এরপর থেকে শিক্ষকদের বাধায় কোনো অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভা করতে পারেননি উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূঁইয়া।

কিন্তু ওই বছরের ৩০ আগস্ট (রোববার) বিকেলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা আহ্বান করেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’। কিন্তু তাদের কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে সকাল ৬টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। অপর দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরাও তাদের কর্মসূচি পালন করতে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন।

ওই দিন সকাল ৮টায় ভিসি তার কার্যালয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ড. ইয়াসমিন হকের নেতৃত্বে আন্দোলনরত শিক্ষকরা ভিসিকে তার কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেন। এসময় শিক্ষকরা ভিসিকে ঘিরে টানাহেঁচড়া করেন। এরপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে শিক্ষকদের ওপর হামলা করে। এক পর্যায়ে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এর প্রতিবাদে বৃষ্টিতে ভিজে প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেন শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত